আর কিছুদিনের অপেক্ষা তারপর আবারও ছক ভাঙার গল্প বলতে আসছেন ঋতাভরী। এই গরমের ছুটিতে মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর অভিনীত, অরিত্র মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ফাটাফাটি। এই ছবির প্রযোজনা করেছে উইন্ডোজ প্রোডাকশন, নিবেদন করেছেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায়। এই ছবির গল্পে উঠে আসবে এক প্লাস সাইজ মডেলের গল্প। যাঁরা মডেলিং, সাজগোজ বলতে কেবলই ছিপছিপে, রোগা গড়নের কাউকে বোঝেন, ভারী বা সমাজের চোখে যাঁরা 'মোটা' তাঁদের অনবরত হেনস্থা এবং কটাক্ষ করে চলেন তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। সমাজের চোখে যাঁরা তথাকথিত কালো, মোটা তাঁদের যে ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হয় সেটাই তুলে ধরবে, একই সঙ্গে প্রতিবাদ করবে। এবার এই ছবি মুক্তির আগে এই প্রসঙ্গে কথা বললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এবিপি আনন্দকে দেওয়া ইন্টারভিউতে সাফ সাফ জানিয়ে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলা ট্রোলকে তিনি মোটেই পাত্তা দেন না। সেই জন্যই তো তিনি ফাটাফাটি থাকেন। তিনি মনে করেন কেউ যদি ভিতর থেকে খুশি থাকে তাহলে তাঁকে বাইরে থেকেও খুশি দেখায়। তাঁর কথায়, 'মানুষ মোটা, রোগা, কালো, বেঁটে কত রকমের তকমা দেওয়া জন্য বসে আছে। যেন একটা লেবেল গায়ে আটকে দিতে পারলেই হল! কিন্তু আমি এসব লেবেলে একদম পাত্তা দিই না। আমি যেহেতু এসবে মাথা ঘামাই না সেহেতু আমি সবসময় ফাটাফাটি থাকি।'
ফাটাফাটি শব্দটি উঠলই যখন তখন সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই আসন্ন ছবির বিষয়ে বলেন, 'এই যে লোকজন আমাকে দেখেই তা তা থৈ থৈ বলে ওঠেন তাঁদের তো কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। আমরা তাঁদের এত ভাবার সময়, অপশন দিচ্ছি। কৃতজ্ঞতা থাকলে এই ছবি দেখা উচিত সবার।'
সকলেই জানেন ঋতাভরী এই ছবির জন্য কতটা পরিশ্রম করেছেন। কত কিলো ওজন বাড়িয়েছিলেন স্রেফ এই ছবির জন্য। সেই কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, 'মনে রাখবেন ঋতাভরী কিন্তু নিজের জন্য এই কাজ করেনি, আপনাদের জন্য করেছে। ও আবার তন্বী হবে। আবার সুইমস্যুটে ধরা দেবে। কিন্তু আমরা? ওই হাতে থাকা ফোনে আবার খাপ পঞ্চায়েত বসাব।'
পর্দায় ঋতাভরী যে গল্প তুলে ধরতে চলেছেন অরিত্রর চোখ দিয়ে সেই গল্প বাস্তবে ফেস করেছেন বৈশাখী। তাঁকে হামেশাই তাঁর সাজ, পোশাক এমনকি সম্পর্ক নিয়ে বিস্তর কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল। এখনও হয়। চলে মাত্রাহীন ট্রোলিং। এসব কিছুর মধ্যে নিজেকে কীভাবে সামলান তিনি? উত্তরে বৈশাখী বলেন, 'আমি যখন এসবের সম্মুখীন হই আমায় অনেকেই বলেছিলেন যে আইনের দ্বারস্থ হও। আইনি ব্যবস্থা নাও। কিন্তু আমি নিইনি। কেন জানেন? কারণ আমি চাই আমার মেয়ে দেখুক, ও জানুক ওর মা কিসের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল তবুও কখনও আত্মবিশ্বাস হারায়নি।' তিনি আরও বলেন, 'এই সিনেমা তো ২-৩ ঘণ্টার। শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের ট্রোলিং নিয়েই পথ চলতে হয়। বাঁচতে হয়।'