গত ২৭ ডিসেম্বর পিতৃবিয়োগ হয়েছে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেতার বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। বাবার স্মৃতিতে আবেগঘন পোস্ট করলেন দুই বাংলার এই জনপ্রিয় অভিনেতা।
বাবার মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন চঞ্চল। গত দুদিন কিছুই বলেননি। বেদনা চেপে সেরেছেন বাবার শেষকৃত্য। কিন্তু বাবার শূন্যতা যেন কোনওভাবেই মানতে পারছেন না।
বৃহস্পতিবার বাবাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন চঞ্চল। অভিনেতা লেখেন, ‘গতকাল নিজগ্রাম কামারহাটের পদ্মাপাড়েই তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাবা মিশে গেল এই গ্রামেরই আলো বাতাসে,পদ্মার জলে। সন্ধ্যায় ধর্মীয় আচার শেষে যখন নদীর পাড় থেকে বাড়ি ফিরলাম, তখন ভুলেই গিয়েছিলাম যে, বাবাকেই তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি।’
আরও পড়ুন: চিতাবাঘ-হরিণের দর্শন, রাজস্থানে জঙ্গল সাফারির ফ্রেশ ছবি দিলেন ভিকি-ক্যাটরিনা
অভিনেতা আরও লেখেন, ‘সারা রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সারা বাড়িময়, ঘরময় যেন বাবা গুটি গুটি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। এই বুঝি কখন আমায় ডাক দিয়ে বলবে,‘চঞ্চল…বাবা ঘুমাইছো?’, বাবার কোনও কথা আর কোনও দিন কানে বাজবে না বাবাকে দেখতে পাব না, এগুলো কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’
চঞ্চল জানান, তার বাবা শীত সকালে যে শাল পরতেন, যেখানে বসে রোদ পোহাতেন, বাড়িতে বাবার রেখে দেওয়া শাল গায়ে জড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। লেখেন, ‘যখন এই কথা গুলো লিখছি, শীতের এই সকালে, বাবার শালটাই আমার শরীরে জড়ানো। যে জায়গায় রোদে বসে আছি, এ জায়গায় বসেই বাবা রোদ পোহাতো। রোদের উষ্ণতা নয়, বাবার শরীরের কোমল উষ্ণতা খুঁজে ফিরছি এখন, বাকি জীবনটা হয়তো এভাবেই খুঁজতে হবে।’
প্রসঙ্গত, চঞ্চল চৌধুরীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। এলাকায় তাঁর বাবা দুলাল মাস্টার বলে পরিচিত। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন চঞ্চলের বাবা। তারপর সেরিব্রাল হলে অবস্থার আরও অবনতি হয়। বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এ পার বাংলায় ‘হাওয়া’ মুক্তি সম্পর্কিত সাংবাদিক সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন চঞ্চল।
ঢাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে দুই সপ্তাহ ধরে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন অভিনেতার বাবা। আচমকা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে আর বাঁচানো যায়নি তাঁকে। বাবার মৃত্যর পর ফেসবুকে কিছুই লিখতে পারেননি ‘কারাগার’-এর ‘মিস্ট্রিম্যান’। শুধু লিখেছিলেন, ‘বাবা…।’