বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনে মুখর হয়েছিলেন সেদেশের বহু তারকা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তিনি অবশ্য শুধু ওপার বাংলাতে নয়, এপারেও যথেষ্ট পরিচিত। কলকাতার পাশাপাশি বলিউডেও কাজ করেছেন বাঁধন। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রথম আলোর এক অনুষ্ঠানে গিয়ে আজমেরী হক বাঁধন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পরিবর্তীত পরিস্থতিতে তিনি নাকি এখন আর ভারতে আসার ভিসা পাচ্ছেন না। তাঁর ভিসার আবেদন ভারতের হাই কমিশনের তরফে ৪ বার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কেন? ভিসা না পাওয়ার কারণ হিসাবে কী জানিয়েছেন বাঁধন?
সাক্ষাৎকারে বাঁধনকে বলতে শোনা যায়, ‘এর আগে ভারতে ভিসা না পাওয়ার বিষয়টা নিয়ে আমি মুখ খুলিনি, কারণ চাইনি, এটা নিয়ে বেশি শোরগোল হোক। ইন্ডিয়াতে আমার কাজটাই না হোক, সেটা চাইনি। তবে শেষপর্যন্ত দেখলাম যে এটাও তো আমার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমার একজনের সঙ্গে ছবি আছি, ভিপি নূরের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিপি নুরুল হক নূর) সঙ্গে ছবি ছিল, যেটা আমার অ্য়াকাউন্ট থেকে পোস্ট করা, তো ওরা (ইন্ডিয়ান হাই কমিশন) আমাকে এটা নিয়ে চার্জ করেছে।’
বাঁধনের কথায়, ‘আমাকে প্রশ্ন করা হয়, আমার কেন ওঁর সঙ্গে ছবি আছে। আমি ওঁর সঙ্গে কীভাবে সংযুক্ত? আরও নানান রকমের প্রশ্ন করা হয়। তারপর ৪ বার আমার ভিসার আবেদন বাতিল করেছে ইন্ডিয়া। অথচ এর আগে আমি কলকাতায় কাজ করেছি, বলিউডেও কাজ করেছি। আর আমার সমস্ত কাগজপত্রও আছে। এমন নয় যে কাগজপত্র ছাড়া আমি শুধু পুলিশ ভিসায় যাব। আমার কাজের জন্য যাওয়ার কথা। তবে ভিসা ওরা দেয়নি। আর ট্যুরিস্ট ভিসা তো দেবেই না।’
বাঁধন জানান, ‘আমার কলকাতার একটা কাজ করার কথা ছিল, আর আমার বেঙ্গালুরুর এক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জুরি হওয়ার কথা ছিল।’ বাঁধনের দাবি, ‘বিশাল ভরদ্বাজের ফ্রেন্ডের এক ফ্রেন্ড ছিলেন আগের হাই কমিশনার। ওনাকে মেইল করা হয়েছিল আমার জন্য। তখন যখন ভিসা পেয়েছিলাম, তখন যিনি হাইকমিশনার বিক্রমজি, উনি আমায় নিজে ডেকে পাসপোর্ট আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। আমি ওঁর সঙ্গে বসে চা খেয়েছি। প্রোজেক্ট নিয়ে কথা বলেছি। ইন্ডিয়ান হাই-কমিশনের পেজ থেকে বেস্ট উইশ জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছিল।
আর এখনকার ছবিটা হল বর্তমান যিনি হাই কমিশন, কেম ভিপি নূরের সঙ্গে ছবি তুলেছি, সেই প্রশ্ন তুলে আড়াই বছর আমায় ভিসা দেয় নি। কিন্তু কেন, আমি তো অভিনেত্রী। আমার তো কোনও বাউন্ডারি থাকা উচিত নয়। আমি সর্বত্র গিয়ে কাজ করতে পারি। আর ওখানকার পরিচালক, জুরি কমিটিও চাইছিলেন আমি যাই, যেজন্য শেষপর্যন্ত ওঁরা আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন।’
বাঁধনের কথায়, ‘আমি বলছি না, ওদেশে আমি যেতে চাই না। আমি যেতে চাই। তবে ওরা কোনও কিছুতেই ভিসা দিচ্ছে না। কারণ ব্ল্যাকলিস্ট করে দিয়েছে। এরপর অনেককে দিয়ে বলিয়ে আমি শেষবার ভিসা পেয়েছিলাম অল্প সময়ের জন্য। তবে আশাকরি আমি ভবিষ্য়তে ভারতের ভিসা পাব, ওখানে গিয়ে অবশ্যই কাজ করব।’