গত ২ মাস ধরে যেন ঝড় বয়ে চলেছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনির জীবনে। একের পর এক ওঠাপড়ার মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি। ঢাকা বোটিং ক্লাবে গিয়ে ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ীর দ্বারা নিগৃহিত হয়ে প্রতিবাদ জানান সোশ্যাল মিডিয়াতেই। সে কারণে তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর আচমকাই গ্রেফতার হন মাদক মামলায়। ২২ দিন ছিলেন জেল হেফাজতে। সে সময় বাংলাদেশের তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে পরিমনির অন্তরঙ্গ ভিডিও সামনে আসে হঠাৎই। তা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। দেখা যায়, সেদেশের পুলিশ অফিসারের ঠোঁটে ঠোঁট রাখছেন নায়িকা। তবে, লড়াই করার ক্ষমতা যে একেবারেই হারিয়ে ফেলেননি, সে বার্তা দিয়ে চলেছেন বারবার, জেল থেকে বেরনোর পর থেকেই।
সম্প্রতি দুই বাংলার জনপ্রিয় গায়ক নচিকেতার গানের দুটো লাইন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে শেয়ার করলেন অভিনেত্রী। সোমবার নিজের ফেসবুকে নচিকেতার ২০১৭ সালের গান ‘এত সাহস কার’ ভাগ করে নিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে, গানের কথাতেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন লড়াই করার রসদ। সে গানে শিল্পী বলেছেন, ‘তোমার মন খারাপের কারণটা কে, এত সাহস কার?.... তাকে আকাশ থেকে এই মাটিতে নামানো দরকার।’
পরীমনির ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে নচিকেতা জানান, ‘আমার ব্যক্তিগতভাবে পরীমনিকে ভালো লাগে। ভীষণ সাহসী। যেটা বলা উচিত সেটা সবার সামনে বলার ক্ষমতা আছে ওর। যেভাবে নিজের দেশের পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তা খুব একটা সহজ নয়। আমি জানি তিনি আমার গান শোনেন। পছন্দও করেন। আমি পরীমনির অনুপ্রেরণা জেনে ভালো লাগছে।’
এর আগে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, দাদু শামসুল হক গাজির এক চিঠি তাঁকে জেলবন্দি অবস্থায় বেঁচে থাকার রসদ জুগিয়েছে। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকার সময়তেই এই চিঠি পান তিনি। সেটাই নিজের কাছে রেখেছিলেন খুব যত্নে। যাতে লেখা আছে মাত্র চারটে লাইন-- 'নানু আমি ভালো আছি। কোনো চিন্তা করবা না। তোমার সাথে শিগ্রই দেখা দিব।'
বাবা-মাকে হারানোর পর পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার সিংহখালী গ্রামে নানার বাড়িতেই শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পরীমনির। বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে পরীমনি জানিয়েছেন, 'আমি গ্রেফতার হওয়ার পর নানু ভাই আমাকে চিঠিটি দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই আমি এটি অক্ষত রাখার চেষ্টা করেছি। আটক, রিমান্ড, জেলসহ নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত আমি এটি অক্ষত রাখতে পেরেছি। এই চিঠিটি আমার জীবনের একটি শক্তি।'