বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ। বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন একটাই দেশ, একটাই নাম। কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র অন্দোলন দিয়ে দেশ উত্তাল হতে শুরু করলেও ক্রমে পরিস্থিতি রাজনৈতিক পালাবদলে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, দেশও ছেড়েছেন। আর তারপর থেকেই বর্তমানে গোটা দেশ অগ্নিগর্ভ। চারিদিক থেকে সাম্প্রদায়িক হিংসার ছবি উঠে আসছে। এই পরিস্থতিতে দেশকে ও দেশবাসীকে শান্ত হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন সেদেশের বহু তারকা।
এদিকে ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই ছাত্রদের পাশেই ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম চর্চিত অভিনেত্রী পরীমনি। কিন্তু দেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এখন কেমন আছেন বাংলাদেশের 'পরী'?
নিজের পরিস্থিতি নিয়ে আনন্দবাজারের কাছে মুখ খুলেছেন পরীমনি। তাঁর কথায়, ‘বাড়িতে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বসে আছি। রাস্তায় একটাও লোক নেই। কী হবে জানি না! দমবন্ধ হয়ে আসছে।’ এদিকে পরীমনি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে বিক্ষুব্ধদের সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে পরীমনি ফেসবুকের পাতায় লেখেন, ‘শান্তি চাই!! লুটপাট, থানা আক্রমন, প্রতিহিংসা চাই না!! আমরা সংযত হই, দ্বায়িত্ববান হই। প্রিয় বাংলাদেশে আর রক্তপাত চাই না।’
আবার কোরানের ১০ নম্বর আয়াত থেকে পংক্তি তুলে পরীমনি লিখেছেন, ‘বিপদ কেটে গেলে মানুষ উৎফুল্ল ও অহংকারী হয়ে যায়। - (সূরা হুদ, আয়াত : ১০)’ এই পোস্টের ক্যাপশানে পরীমনি লিখেছেন ‘সংযত থাকা জরুরী …’। আবার এই পরীমনিই কখনও ঢাকা শহরে ছাত্রছাত্রীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সামলানোর ছবি পোস্ট করেছেন।
এদিকে বিতর্ক সবসময়ই সঙ্গে থাকে পরীমনির। সোমবার হাসিনা সরকার নিপাত যেতেই ফেসবুকে বিস্ফোরক হন নায়িকা। পরীমনি লেখেন,'তিন বছর আগে এই ৫ আগষ্ট যে ভাবে আমার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলো…….. প্রকৃতি হিসেব রাখে মা'। এই পোস্টে মূলত হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধেই এই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন পরীমনি। তিন বছর আগে এই একই দিনে (৫ অগস্ট) মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন পরীমনি। প্রায় মাসভর জেলে থাকার পর জামিনে ছাড়া পান পরী। সেই যন্ত্রণা, ক্ষত আজও দগদগে বুঝিয়ে দিলেন নায়িকা।
ওদিকে পরীমনির প্রাক্তন স্বামী শরীফুল রাজও নিজের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে লেখেন, ‘বিজয় উৎসব করুন। কিন্তু যারা লুটপাট ও আগুন দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন’।
এদিকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন এপার বাংলার শিল্পীরাও। তাঁরাও শান্তির বার্তা দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তৈরি হতে চলেছে। এই সরকারের রূপরেখা নিয়ে গণভবনে বৈঠক চলছে। প্রথম আলো সূত্রে খবর, রাষ্ট্রপতি ও তিনবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ সদস্যের একটি দল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ বৈঠক শুরু হয় বলে প্রথম আলোকে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম। বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যপক তানজীমউদ্দীন।