মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা, আচমকা দুর্ঘটনায় চোখে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন পরীমনির ছেলে। ফেসবুকের পাতায় ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া পরীর ছেলের চোখ দেখে আঁতকে উঠেছিলেন অনেকেই। অভিনেত্রীর পোস্ট থেকেই জানা গিয়েছিল দুর্ঘটনার কারণেই এমনটা ঘটেছে। ছেলেকে সুস্থ করতে এই হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়েছিলেন পরীমনি। তবে আপাতত ছেলে পদ্ম অনেকটাই সুস্থ। আর তাই তার মন ভালো করতে নৌকাবিহারে গেলেন বাংলাদেশের 'পরী'।
পদ্মার বুকে নৌকা বিহারে গিয়ে সেখান থেকেই ছেলেকে নিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করলেন পরীমনি। যে ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, নৌকার উপর পাতা বেবি ম্যাটে বসে রয়েছে পরীমনির ছেলে, তার সামনে রাখা একাধিক খেলনা গাড়ি। যেগুলি একটা একটা করে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে পদ্ম। কোনওটাই তার পছন্দ হচ্ছে না। শেষপর্যন্ত শুধুমাত্র গোলাপী রঙের একটা খেলনা বাস নিয়ে খুশি হল 'পরী'র বাজান। অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করতে দেখা গেল, ‘তুমি সব ফেলে দিয়েছো, কেন ফেলেছো?’ ছেলের ফেলে দেওয়া হলুদ গাড়িটি তুলে দেওয়া হলে, আবারও সে সেটি ফেলে দেয়। তারপর সেখানে থাকা, অভিনেত্রীর সহকারীর কোলে উঠে যেতে দেখা যায় পদ্মকে। সেই যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘সব বাদ, শুধু বাস’।
ভিডিয়োতে ক্যামেরা ঘুরিয়ে সুন্দর পদ্মা আর পদ্মাপাড়ের সূর্যাস্তও দেখাতে দেখা যায় পরীমনিকে। এরপর ‘আয় মামা’ বলে অন্য এক ব্যক্তির কোলেও উঠে যেতে দেখা যায় ছোট্ট পদ্মকে। ছেলের কাণ্ডে পরীমনি বলেন, ‘তোর মায়েরও মামা, তোরও মামা, ঠিকই আছে।’
আরও পড়ুন-ভাইফোঁটা নিলেন জিতু কমল, চেনেন নাকি অভিনেতার এই বোনটিকে?
আরও পড়ুন-ফ্যাশান ডিজাইনার অভিষেক রায়কে ফোঁটা দিলেন স্বস্তিকা, পেলেন দুর্মূল্য উপহার, কী সেটা?
এদিকে কিছুদিন আগেই দুর্ঘটনায় যখন ছেলে পদ্মর চোখে আঘাত লাগে, সেসময় বাড়িতে ছিলেন না পরীমনি। তবে ফিরে এসে ছেলের এই অবস্থা দেখে সহকারীদের উপর বেজায় চটেছিলেন অভিনেত্রী। ক্ষোভ উগরে দিয়ে ফেসবুকের পাতায় লিখেছিলেন, ‘আপনারা অনেকেই হয়তো ইতিমধ্যে জানেন যে, গত ২৯ তারিখ আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ #রঙ্গিলা_কিতাব এর ট্রেলার লঞ্চিং এর আয়োজন ছিলো! সেখানে আমি আমার ছেলে কে নিয়ে যাইনি বা নিতে চাইও নি । তার অনেকগুলো কারণ, এর মধ্যে একটি হলো আমি আসলেই চাইনি আমার বাচ্চা কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ক্রাউড ফেইস করুক । দ্বিতীয়ত আমি আমার ছেলের জন্য দ্বায়িত্বরত (তিন জন) মানুষদের একটা সুন্দর/ প্রপারলি দ্বায়িত্ববোধ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি ফেইল্ড ! আমার ছেলেটা ইনজুর্ড। স্বাভাবিক ভাবেই আমি সবার কাছে জানতে চেয়েছি ইঞ্জুরড কীভাবে হয়েছে? কেউই সত্যি/ ঠিকভাবে কোনোও উত্তর দেয়নি! তাদের একটাই উত্তর আমি/আমরা কিছু জানিনা। কই কী হইছে দেখিতো! আমি একটা পর্যায়ে আমার কন্ট্রোল হারাই। রাগে আমার পুরো পৃথিবী অগুন লাগাতে ইচ্ছা হয়েছিল। কিচ্ছু লাভ হয়নি তাতে! তারা সবাই তাদের ওই এক উত্তরেই আটকে ছিল। আমার ও আর বারবার জেরা করা সম্ভব হয়নি। কারণ ছেলে শুধু আমাকেই দেখছিল। আমিও সব ছেড়ে ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে যাই । ঘুম থেকে উঠে দেখি ছেলের এক চোখ আর খোলে না! কি করব বুঝতে পারি না। এভারকেয়ার হসপিটাল থেকে বাংলাদেশ আই হসপিটাল, ছুটতে থাকি……এতো অসহায় লাগছিল আমার…’
পরীমনি আরও লিখেছিলেন, ‘যাই হোক ,আল্লাহর রহমতে অনেক খারাপ হওয়ার হাত থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি অবাক হই আমার ছেলে ঠিক আমার আর আমার নানা ভাইয়ের মতো কী করে যেন সব সহ্য করে নেয়। এত ধৈর্য্য আর সহনশীলতা এই ছোট্ট বয়সে..! আল্লাহ মহান!!… আমি সব সঠিকভাবে সামলে উঠতে পারছি না হয়তো। কিন্তু আমি আমার শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দোয়া করবেন।’