আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারের খুন ও ধর্ষণ নিয়ে গর্জে উঠছে বাংলা মুহুর্মুহু। এক সময়ের বেশি হয়ে গেল রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। তারই মাঝে, একটি পোস্টে, বাংলাদেশের নাগরিক, বর্তমানে ভারতের নিউ দিল্লির বাসিন্দা, বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন একটি পোস্ট করলেন ফেসবুকে। যেখানে ‘ডাক্তারদের অবহেলা’র দিকেই তুললেন তিনি আঙুল।
পেশায় তসলিমা শুধু সাহিত্যিক নন ডাক্তারও। তিনি ফেসবুকের একটি পোস্টে কিছু পুরনো ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘২০২২-এর রোগ শোকের বালাই নেই সেই স্লিম আমিটি মরে গেছে। মরে গেছে এক করপোরেট হাসপাতালে ঘটা মেডিক্যাল ম্যালপ্র্যাক্টিসের শিকার হয়ে। লোকে তখন অবশ্য বলতো, 'ও মা গো কী ভীষণ রোগা হয়ে গেছ, দেখতে বিচ্ছিরি লাগছে'।’
এরপর তিনি আরও লেখেন, ‘ক্রাইম সার্জারির পর ধীরে ধীরে ওজন বাড়ছে, একে নিয়ন্ত্রণ করতে যা যা করতে হয়, তা এখন আর করা সম্ভব হচ্ছে না। ধুমসি মুটি হচ্ছি দিন দিন। রোগ শোক মহাসমারোহে ফেরত এসেছে। এখন অবশ্য লোকে বলে, 'স্বাস্থ্যটা খুব ভাল হয়েছে।'’ যদিও ২০২২ সালে কোথায় এই অপারেশনটি হয়েছে, বা কারা করেছে, সে বিষয়ে কোনও সম্পষ্ট মন্তব্য করেননি তিনি। তবে সেই সময়, তিনি ছিলেন দিল্লিতেই।
এখানেই শেষ নয়, কমেন্ট সেকশনে একজন তাঁকে পরামর্শ দেন, ‘চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সুস্থ থাকার, যতদিন তুমি বেঁচে আছো ۔ হাল ছেড়োনা, ব্যায়াম করো। তোমাকে এ সমাজে খুব দরকার’। তাতে তসলিমা ফের চিকিৎসাব্যবস্থার দিকে আঙুল তুলে লেখেন, ‘প্রকৃতিগত বা জিনগত কারণে অসুস্থ হলে সে মানা যায়। কিন্তু যখন বদ লোকেরা হাসপাতালের দেওয়া টারগেট পুরণ করতে বা টাকার জন্য অন্যের সর্বনাশ করে, অন্যের আয়ু কমিয়ে ফেলে, তখন মানা যায় না। তোমাদের কেউ কেউ তো বদ লোকের মধ্যে সততা খোঁজো।’
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফেসবুকে একটি পোস্টে তসলিমা লিখেছিলেন, লাখ লাখ টাকা দিয়ে হাসপাতাল থেকে পঙ্গুত্ব কিনে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। হোঁচট খেয়ে পড়ে হাঁটুতে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, চিকিৎসকেরা ঠিকমতো পরীক্ষা না করেই একটি এক্সরের ভিত্তিতে বলে দিয়েছিলেন তাঁর হিপ ভেঙেছে, হিপ রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে। এরপর তড়িঘড়ি টোটাল হিপ রিপ্লেসমেন্ট করে দেন চিকিৎসক। তাঁর হিপ জয়েন্ট আর ফিমার গেছে চিরতরে, জীবন আর আগের জীবন নেই, চলাফেরা শ্লথ হবে যদি কোনো দিন হাঁটতে পারেন। এমনকী, তখনই তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ঠিক হয়ে গেলেও অজস্র রোগশোকে আক্রান্ত হবেন।
এখানেই শেষ নয়, সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের একটি নিউজ পোর্টাল সেই সময় দাবি করেছিল, নয়া দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালের নামে ভুল চিকিৎসার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন তসলিমা নাসরিন।
২০২৩ সালের পোস্টে তসলিমা আরও লিখেছিলেন, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না বড় ডাক্তাররা এমন ভয়াবহ ক্রাইম করতে পারেন। আর আমি জানি না আমারও বুদ্ধিসুদ্ধি কোথায় উবে গিয়েছিল যে, এমন ক্রাইমের শিকার হতে নিজেকে দিলাম!’