বাংলাদেশ এবং ভারত দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। এতদিন ওপার বাংলার আমার সোনার বাংলা গানটি জাতীয় সঙ্গীত আছে। কিন্তু এখন হাসিনার সরকারের পতনের পর তীব্র হচ্ছে সেদেশের জাতীয় সঙ্গীত বদলে ফেলার।
আরও পড়ুন: টিভির গণ্ডি পেরিয়ে OTT-তে এবার মহিষাসুরমর্দিনী! দুর্গা রাজনন্দিনী পালের সঙ্গে থাকছে আর কোন চমক?
কী জানা গিয়েছে?
ঢাকায় তীব্র হচ্ছে সংবিধান বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর দাবি। আর সোনার বাংলা গানটিকে সেদেশের অনেকেই আর জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে চাইছেন না। আর এই গোটা বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বাদ যাননি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। যদিও অনেকেই আবার গোটা বিষয়ের বিরোধিতাও করেছেন।
এই বিষয়ে প্রথম দাবি তোলেন বাংলাদেশ সেনার প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমি। গত বুধবার তিনি এই দাবি জানান। কিন্তু কেন তাঁর আপত্তি? তাঁর মতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয়। তাঁর লেখা গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে না। একই সঙ্গে এই গানের সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার কোনও মিল নেই বলেও তাঁর অভিমত।
অনেকেই যেমন এই দাবির বিরোধিতা করেছেন। অনেকে আবার সমর্থ করেছেন। তবে ওপার বাংলার জনপ্রিয় লেখিকা তসলিমা নাসরিন ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছেন এই বিষয়ে। লেখেন, ‘জাতীয় সঙ্গীত ছাড়া আমার দেশ নিয়ে গর্ব করার বেশি কিছু পাই না আমি । প্যারিসে যখন ছিলাম, ফরাসি বন্ধুদের বলতাম, তোমাদের জাতীয় সঙ্গীত লা মারসেইয়েজ এ কেবল রক্ত নেওয়া আর খুনোখুনির কথা বলা হয়েছে, আমাদের জাতীয় সংগীতে আছে ভালবাসার কথা। আজ বেচারা দেশ আমার, জিহাদিদের কবলে। জিহাদিরা রক্ত খুন ইত্যাদি পছন্দ করে। তাদের হৃদয় ঘৃণায় টইটম্বুর। তারা ভালোবাসার মূল্য বোঝে না। সে কারণে দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ হয়েছে এমন জাতীয় সঙ্গীত তাদের ভালো লাগে না। ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক মানসিকতা গানটিকে ঘৃণা করে যেহেতু গানের রচয়িতা এবং সুরকার একজন অমুসলিম।’
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলার ইতিহাস
প্রসঙ্গত ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে আমার সোনার বাংলা গানটি লেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হলে এটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে বেছে নেন শেখ মুজিবর রহমান। তবে তাঁর মৃত্যুর পরে থেকেই একাধিকবার গানটি পরিবর্তন করার দাবি উঠেছে।