মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ‘ডিস্কো কিং’ বাপ্পি লাহিড়ি। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। জুহুর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। জন্মসূত্রে নাম ছিল অলকেশ। পিতা-মাতার সান্নিধ্যেই তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি।
১৯৫২, ৭ নভেম্বর: জলপাইগুড়ির ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয় বাপ্পি লাহিড়ির। অপরেশ লাহিড়ি ও বিষ্ণু লাহিরির সন্তান ছিলেন তিনি অলকেশ লাহিড়ি। পরে নিজের নাম রাখেন ‘বাপ্পি’।
১৯৫৫: মাত্র ৩ বছর বয়সে তবলা বাজানো শুরু করেন তিনি।
১৯৭২: ১৯ বছর বয়সে দাদু নামক বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন শিল্পী।
১৯৭৩: মুম্বই চলে আসেন মামার মতো বলিউডে কাজ করার ইচ্ছে নিয়ে। হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম কাজ ‘নানহা শিকারি’। ছবিতে গীতকারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
১৯৭৫: কেরিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ‘জখমি’ ছবি দিয়ে। এই সিনেমায় গীতকারের পাশাপাশি প্লেব্যাকও করেন তিনি।
১৯৮০-১৯৯০: এই সময়কালের মধ্যে মিঠুন চক্রবর্তী এবং বাপ্পী ল্যাহড়ী একসাথে বেশ কিছু ভারতীয় চলচ্চিত্রে কাজ করেন। আর এখান থেকেই পেয়ে যান ‘ডিস্কো কিং’এর খেতাব। কিশোর কুমার, আশা ভোঁসলে থেকে ঊষা উত্থুপদের সাথে কাজ করেছেন। ওগো বধূ সুন্দরী, নমক হালাল, ডিস্কো ডান্সার, ডান্স ডান্স, সত্যমেব জয়তে, কম্যান্ডো, থানেদার-র মতো সিনেমায় কাজ করেছেন।
১৯৮৫: জিতে নেন প্রথম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। অমিতাভ বচ্চনের ‘শরাবি’ ছবির জন্য পেয়েছিলেন বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর অ্যাওয়ার্ড।
২০০০-২০১৯: এই সময়কালের মধ্যে ‘সি কোম্পানি’, ‘চান্দনি চক টু চায়না’, গুণ্ডে, হিম্মতওয়ালা, বদ্রিনাথ কি দুলহানিয়া, শুভ মঙ্গল জাদা সাবধান-র মতো ছবিতে সুর দিয়েছিলেন ও গান গেয়েছিলেন।
২০১২: ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ ছবির বিখ্যাত গান ‘উ লা লা’-র জন্য পেয়েছিলেন মির্চি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড।
২০১৮: জিতে নেন লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফিল্মফেয়ারের তরফে।
২০২০: ‘বাগি ৩’ ছবির ভাঙ্কাস গানে সুর দেন ও গান গান। এটাই ছিল তাঁর শেষ কাজ হিন্দি সিনেমায়।
২০২১: গত বছর করোনা আক্রান্ত হন তিনি। গুজব রটে স্বর হারিয়েছেন তিনি। যদিও বাপ্পি লাহিড়ি জানিয়েছিলেন সামান্য সর্দিতে গলা বসে গিয়েছে। তাঁর নামে ভুয়ো খবর রটানো হচ্ছে। নভেম্বর মাসে ‘সারেগামাপা’র মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। এসেছিলেন ‘বিগ বস ১৫’-তেও নাতি স্বস্তিকের গান ‘বাচ্চা পার্টি’র প্রচারে।
২০২২, ১৫ ফেব্রুয়ারি: মঙ্গলবার রাত ১১.৪৫ মিনিটে মুম্বইয়ের জুহুর এক হাসপাতালে জীবনাবসান হয়েছে বাপ্পি লাহিড়ির। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন। ২৯ দিন এই নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু গতকাল তাঁকে ফের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
২০২২, ১৭ ফেব্রুয়ারি: বৃহস্পতিবার বাপ্পি লাহিড়ির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে। পুত্র বাপ্পা লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ফিরলে নিয়ে যাওয়া হবে মুম্বইয়ের পবন হংস মহাশ্মশানে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করতে।