করোনা মোকাবিলায় এবার অভিনব উদ্যোগ নিল বাংলার সঙ্গীতশিল্পীরা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে মানুষ। ঘরবন্দি দশায় বন্ধ সামাজিক যোগাযোগ, এই মুহূর্তে মনের শান্তিটাই সবচেয়ে জরুরি। জনপ্রিয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান এবং তাঁর পুত্র আরমান সম্প্রতি তাঁদের বাড়ি থেকে একটি অনলাইন ভজন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। রাজ্যবাসীর মনোবল বাড়াতেই দক্ষিণ কলকাতার বাসভবন থেকেই ‘সুবহা হো শ্যাম হো তেরা নাম জঁপু’, ‘ধীরে ধীরে রে মানা, ‘ইয়ে অন্ধিয়ারা মিট যায়েগা’-র মতো ভজন শোনালেন রশিদ খান। বাদ্যে যোগ্যসঙ্গত দিল তাঁর সুপুত্র আরমান।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে রশিদ খান জানিয়েছেন, ‘আমরা সব ধরণের সমস্যাকে জয় করতে পারব যদি সঙ্গীতের মধ্যে আমরা শান্তি খুঁজে নিতে পারি’। ওস্তাদ রশিদ খান মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন গানই সবচেয়ে বড় সাধনা।
খয়রাসোলের নারায়ন বাউল, শান্তিনিকেতনের আনন্দ খ্যাপা লোকগানের মাধ্যমেই বীরভূমের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। ‘বাউল গান জনগণের মধ্যে কোনও বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার খুব প্রাচীন এবং আদর্শ একটা পথ, এই কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত’, জানিয়েছেন আনন্দ খ্যাপা।
রশিদ খানের ভজন গাওয়ার প্রসঙ্গে কলকাতার নাখোদা মসজিদের ইমাম শফিক কাশমি জানিয়েছেন, ' যখন ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের সানাইয়ের সুর দূর্গা পুজোর ঢাকের আওয়াজে মিশে যায় তখন কী আমরা সঙ্গীতের ধর্ম খুঁজি? একজন সঙ্গীত সাধকের সৃষ্টি সবসময়ই তাঁর ব্যক্তিগত ধর্ম বিশ্বাসে উর্দ্ধে'। একই সুর শোনা গেল সোদপুরের শ্রী চৈতন্য মঠের মুখপাত্রের কন্ঠে। তিনি জানালেন, যখন একজন সঙ্গীতশিল্পী ভক্তিমূলক গান গান, তখন সেটা কীর্তন, ভজন, কাওয়ালি -যা কিছু হতে পারে, সেটা পরমাত্মার সঙ্গে যোগ স্থাপন করতে পারছে কিনা সেটাই আসল'।