টেলিভিশন স্ক্রিনে ভারতী আসা মানেই হাসতে হাসতে চোখে জল! কিন্তু ভারতীর ছোটবেলেটা কেটেছে বহু কষ্টে। এর আগেও সেসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। ছোটবেলায় বাবা-কে হারিয়েছেন। বাবার মুখটাই ঠিক করে মনে করতে পারেন না। তবে সম্প্রতি মণীশ পলের পডকাস্ট শো ‘The Maniesh Paul Podcast’-এ এসে জীবনের নানা অজানা অধ্যায় দর্শকদের সামনে আনলেন ভারতী। যা শুনে চোখের জল ধরে রাখা সত্যিই মুশকিল।
মণীশ আর ভারতী প্রায় এক সময়তেই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। দু'জনেই এসেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে। চোখে একরাশ স্বপ্ন ছাড়া সেসময় তাঁদের কাছে কিছুই ছিল না। সে সময় একে-অপরের বিপদে আর্থিক সাহায্য করতেন তাঁরা। সেখানেই মণীশ জানান, ন্যাশনাল লেভেল শ্যুটার ও আর্চার ছিলেন ভারতী। যার উত্তরে লাফটার কুইন জানান, তিনি নিজেও আজকাল সেসব বিশ্বাস করতে পারেন না। ‘সত্যি তো, কে-ই বা বিশ্বাস করবে এই মোটা চেহারা নিয়ে রাইফেল হাতে তোলা সম্ভব! অ্যাথলেটিক্স তো রোগা ও পাতলা চেহারার মানুষদের জন্য। তবে হ্যাঁ, একথা সত্যি। আমি পঞ্জাবের হয়ে খেলেছি পুণে-তে গিয়ে।’ জানান ভারতী।
কথায় কথায় মণীশকে তিনি আরও বলেন, ‘খেলার অনুশীলনের সময় সরকার থেকে আমাদের খাবার দিত। রোজ ১৫ টাকা করে পেতাম। তার মধ্যে ৫ টাকার একটা কুপন দিয়ে জুস খেতাম যাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারি। বাদবাকি কুপন জমিয়ে রেখে দিতাম। মাসের শেষে সেগুলো জমা দিয়ে বাড়ির সকলের জন্য ফল আর জুস নিয়ে আসতাম। এখনও মনে আছে বাড়ির সবাই ওই ফলের আশায় বসে থাকত। আমরা গোল করে বসে থাকতাম। কখন এক টুকরো ফল খেতে পারব।’
এই কথোপকথনের সময়তেই ভারতী জানান, তিনি ভীষণ অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন। একসময় প্রতিদিন খাবার জুটত না। তাঁর দাদা একটি দোকানে কাজ করতেন। মা ও দিদি কম্বল বুনতেন। ভারতীর কথায়, ‘আমি সেসময় হোস্টেলে থাকতাম। ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করতো না। সেই অন্ধকার ঘর। সেই না খেয়ে থাকার ভয়ে।’ মা লোকের বাড়ি কাজ করতেন। ‘মাতা-রানি’র ওড়না সেলাই করতেন সেসময়। বাড়িতে সারাদিন সেলাই মেশিনের আওয়াজ শোনা যেত। কখনও বাড়ির সকলে নুন দিয়ে রুটি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেন।