ছবি: ভুল ভুলাইয়া ৩
পরিচালক: আনিস বাজমি
অভিনয়ে: কার্তিক আরিয়ান, বিদ্যা বালান, মাধুরী দীক্ষিত, তৃপ্তি দিমরি
রেটিং: ৩/৫
মানে কী লিখব, বা কী বলা উচিত সেটাই ভাবছি। যদি জিজ্ঞেস করেন ভুল ভুলাইয়া ৩ কেমন হয়েছে, তাহলে খুব ছোট করে এবং সহজ ভাষায় বলতে গেলে আনিস বাজমির মনে হয়েছে চলো মজাদার কিছু বানানো যাক, তাই তিনি 'সাদামাটা খিচুড়িতে কয়েকটা মাংসের টুকরো' দিয়ে ভুল ভুলাইয়া ৩ বানিয়ে ফেলেছেন। কী বুঝলেন না কিছুই? তাহলে চলুন বিস্তারিত ভাবেই জেনে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর টু কন্যাকুমারী ভাসছে আলোর উৎসবে, দেশের কোন প্রান্তে কীভাবে পালিত হচ্ছে দীপাবলি?
ভুল ভুলাইয়া ৩ ছবির গল্প
রুহ বাবা ওরফে রুহান ওরফে কার্তিক আরিয়ান লোকজনকে বোকা বানিয়ে ভূতের গপ্পো শুনিয়ে ভালোই ব্যবসা চালাচ্ছিল। এমন সময় তৃপ্তি দিমরি ওরফে মীরা এবং তাঁর মামা রাজেশ শর্মা রুহ বাবা ভূতে ভয় পায় যে সেটার প্রমাণস্বরূপ একটা ভিডিয়ো বানিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করে। এবং তাঁকে বাধ্য করেন তাঁদের সঙ্গে বাংলার এক প্রান্তে, এক ভৌতিক রাজবাড়িতে যেতে। সেখানকার রাজপুরোহিত দাবি করেন এই রাজবাড়িতে ২০০ বছর আগে রাজকুমারী মঞ্জুলিকাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তাঁর আত্মা এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর রুহ বাবা নাকি সেই রাজ পরিবারের অংশ যে পুনর্জন্ম নিয়েছে এই ভূতকে পাকাপাকি ভাবে শেষ করতে। গল্পে সেখানে একে একে এসে হাজির হন বিদ্যা বালান এবং মাধুরী দীক্ষিত। কিন্তু কে আসল মঞ্জুলিকা? সেটার জন্য সিনেমার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কেমন হল ভুল ভুলাইয়া ৩?
ওই যে শুরুতেই বললাম, দুর্দান্ত মজার। হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে যাবে। কার্তিকের কমেডি টাইমিং অসাধারণ। সঙ্গে রাজপাল যাদব, সঞ্জয় মিশ্র তো আছেনই। এঁদের নিয়ে নতুন করে কী আর বলি! বিদ্যা বালান এবং মাধুরী দীক্ষিতের নাচ কেবল নয়, তাঁদের অভিনয়ও এই ছবির অন্যতম ইউএসপি।
কিন্তু ভুল ভুলাইয়া ৩ যখন হলে দেখতে ঢুকবেন দয়া করে বুদ্ধি, যুক্তি, তক্কো বাইরে রেখেই ঢুকবেন অন্তত ২.৩০ ঘণ্টার জন্য। শেষের ১০-১৫ মিনিট এই তিনটি সঙ্গে রাখতেই পারেন। মানে অবশ্যই রাখবেন। কারণ শেষের টুইস্টটাই আসল। গল্পের শেষ পর্যন্ত ধরা যাবে না কে আসল ভূত। একই সঙ্গে বোকা বোকা গল্প হলেও কোথাও এতটুকু ঝিমিয়ে পড়েনি দুর্দান্ত কমেডি থাকার জন্যই হোক বা রাজপাল যাদব, সঞ্জয় মিশ্র সহ কার্তিকের অভিনয়ের জন্যই হোক। প্রাণ খুলে হাসতে বাধ্য হবেন। তবে গোটা গল্পে বহু বাংলা শব্দ ব্যবহার করা হলেও সেটা এত ভয়ঙ্কর উচ্চারণে করা হয়েছে যে কী আর বলি! মানে এক এক সময় মনে হচ্ছিল কেউ যদি উচ্চারণ শুধরে দেওয়ার মতো নাই থাকে, তবে রাখা কেন বাপু?
আরও পড়ুন: আশ্রিতা পরিজাতের সঙ্গে মিলে মিত্তির বাড়িকে এক করতে তৈরি আদৃত! শিকড়কে অটুট রাখতে পারবে কি?
একই সঙ্গে এই ছবিতে রয়েছে দারুণ সামাজিক এক বার্তাও। আর? আর রয়েছে ‘জওয়ান’-এর ক্যামিও। কীভাবে? সেটা তো ছবি দেখেই জানা যাবে। কিন্তু ক্লাইম্যাক্সে আচমকা জওয়ান ছবির থিম সং শুনে যে আপনি চমকাবেন সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। এছাড়া ছবির একদম শুরুর দিকে যেখানে মঞ্জুলিকার ভূতের জন্ম হয় সেই সময় আগুনের ফুলকি দিয়ে ঘুঙুর পরা পা আলাদাই এক আমেজ তৈরি করবে।
ছবি টাইটেল ট্র্যাক বা শুরুর গানটি বেশ ভালো, এমনকি শ্রেয়া ঘোষালের তুমি যে আমার ছাড়াও, পুরুষ কণ্ঠে মেরে ঢোলনা গানটি আলাদাই গায়ে কাঁটা দেওয়াবে। তবে তৃপ্তি এবং কার্তিকের দুটো রোমান্টিক গানই অকারণ জোর করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মানে রাখতে হবে তাই রাখা।
ফলে উৎসবের মরশুমে চাইলে গোটা পরিবার নিয়ে নিছক মজা করতে চাইলে এই সিনেমা একবার দেখতেই পারেন।