কালার্সের জনপ্রিয় শো ‘বিগ বস’। দর্শকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় সলমন খান সঞ্চালিত এই রিয়ালিটি শো। রিয়ালিটি শো ‘বিগ বস ১৪’-র ওয়াইল্ড কার্ড প্রতিযোগী হিসাবে প্রবেশ করেছিলেন কবিতা কৌশিক। অথচ এক সপ্তাহের মধ্যেই শো থেকে উচ্ছেদ হন কবিতা। কারণ কী? শো থেকে উৎখাত হওয়ার পর হিন্দুস্তান টাইমের মুখোমুখি হলেন হিন্দি টেলিভিশনের এই জনপ্রিয় তারকা।
বিগ বসের ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়াটা মোটে ধাক্কা হিসাবে আসেনি তাঁর কাছে। তিনি আরও বলেন, ‘কোথাও, আমি জানতাম যে আমি একজন সহৃদয় এবং সৎ মানুষ। ওই বাড়িতে থাকতে গেলে খুব হিসেব করে, সতর্ক হয়ে এবং এমনকি অনেক কারসাজি করে থাকতে হয়। তা আপনার প্রকৃত চরিত্র হতে পারে না। আপনি যখন নিজের প্রকৃত সত্ত্বা প্রকাশ করেন, আপনার মুখ থেকে যা কিছু আসে তা এখানে বলেন এবং সেখানে একটি শব্দ, একটি বাক্যর পুরো অর্থকে পরিবর্তন এবং পুরোপুরি আপনার এবং আপনার খেলার বিরুদ্ধে যেতে পারে তা। আমি যে অবাক হয়েছি তেমনটা নয়’।
কবিতা যদিও ‘অবাক’ হয়েছিলেন যে, এজাজ খানের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধের কথা পুরোপুরি অন্য মোড় নিয়েছিল। কবিতা স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি যে আসল কথাটা বলতে চাইছিলাম তা দর্শকের কাছে পৌঁছায়নি। আমি যে কথা জানাতে চেয়েছিলাম তা হল এজাজ খানের বন্ধুর প্রয়োজন নেই। তার ভালোবাসার প্রয়োজন নেই। ঘরে তার চামচা দরকার এবং সে তার খেলাগুলি খেলার জন্য মানুষকে ব্যবহার করে। আমি দুঃখ পেয়েছিলাম। আমার দুঃখ পাওয়া উচিত হয়নি। আমার স্মার্ট হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমি আবেগাপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।‘
বিগ বস ১৪’র ‘উইকেন্ড কা বার’ পর্ব চলাকালীন, কবিতা শো’য়ের হোস্ট সলমান খানকে জানিয়েছিলেন, যে লকডাউনের সময় তিনি এজাজের জন্য রান্না করেছিলেন, যা সোশ্যাল থেকে প্রচুর চর্চিত হয়েছিল। অনেকে অনুভব করেছিলেন, তিনি অন্যকে সাহায্য করে সেটা জাহির করবার চেষ্টা করছেন এবং তারপর এই নিয়ে ব্যাপক ট্রোলিংয়ের মুখেও পড়েন কবিতা কৌশিক।
কবিতা এটাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ‘গোটা লকডাউনে খাবার নিয়ে যা চলছে তা খুব সাধারণ ছিল। এমনকি আমি আরও বলেছিলাম আমি ওর সঙ্গে একটি শোতে কাজ করেছিলাম, যেখানে আমাকে বদলে দেওয়া হয়। এজাজ ওই শোয়ের হিরো ছিল। ও প্রচুর কাজ করেছে। আমার চেয়ে কাজের দিক থেকে তিনি বড় সেলিব্রিটি তিনি। সুতরাং, কীভাবে তিনি অভাবগ্রস্ত হবেন? মানুষ এটা কেন ভাবল? বিষয়টা হল এজাজ সিঙ্গেল। রান্না করে দেওয়ার মতো বোন-স্ত্রী বা বান্ধবী ছিল না, লকডাউনে রাঁধুনিও ছিল না। আমি সেই ভেবে ভালো মনে ওর জন্য রান্না করে দিয়েছিলাম। আমি বিগ বসের ঘরেও ওর পাশেই ছিলাম, তবে ও সেখানে বন্ধু নয়- চমচা চেয়েছে'।
আক্ষেপের সুরে কবিতা বলেন- ‘যখন আমি বুঝতে পারলাম তাঁর আমার ভালো ব্যবহারের প্রয়োজন নেই এবং তিনি শুধুমাত্র মুখে আমাকে তাঁর বন্ধু বলছেন, যাতে আমি তাঁর ঘরে চামচা হতে পারি বা তার খেলাটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি ঘরে তার সমর্থন ব্যবস্থা হতে পারি, আমি তখনই দুঃখ পাই। আমি যা বলেছিলাম তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরোপুরি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটিও হাস্যকর যে আমি যে কথা বলেছি সেই কোনও কথা দর্শকরা শুনতে পায়নি। যে ঘটনাগুলো আমি উদাহরণগুলি গুনে প্রকাশ করেছিলাম, আমরা কতবার সাক্ষাৎ করেছি! তার অর্থ এই নয় যে আমি কিছু চাপানোর চেষ্টা করছিলাম। এই শো’তে যেমন হয়, এখানে বা সেখানে একটি শব্দ এবং কারও দল জনসংযোগ ঘটিয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে যায় এবং তারপরে সেই একটি লাইন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়'।
সাক্ষাৎকার চালাকালীন কবিতা খোলসা করেন, কীভাবে তাঁর আচরণ করা উচিত তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছিলেন এজাজ। তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছিল। যা আমি একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমি অবহেলা করতে থাকি। যেখানে তিনি আমাকে বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পুরো বাড়ির সামনে অন্যের সামনে আচরণ করতে। আমি বুঝতে পেলাম তিনি শুধুমাত্র আমাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। বুঝতে পারলাম এভাবেই ভুল পথে চালনা হচ্ছি আমি। এটি ঠিক যে, এটা আমার জন্য খুব বড় একটা জীবন পাঠ। আমিও তাকে ফেস ভ্যালুতে নিয়ে গিয়েছিলাম। এই অভিজ্ঞতা আমাকে আরও বুদ্ধিদীপ্ত করে তুলেছে। আপনার সহায়তার জন্য কাদের প্রয়োজন তা জেনে নিন এবং তাদের নিজের ভাবমূর্তি তৈরিতে আপনার প্রয়োজন কিনা কে জানে। এক বিশাল পার্থক্য রয়েছে'।