দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে এবার আর্জি বিহার পুলিশের। সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রমাম জমা দিল বিহার পুলিশ, কীভাবে সুশান্ত সিং রাজপুতের গার্লফ্রেন্ড রিয়া চক্রবর্তীর পক্ষ নিয়ে বিহার পুলিশের তদন্তে বাধা দিয়েছে মুম্বই পুলিশ। ১৪ই জুন বান্দ্রার অ্যাাপর্টমেন্টে রহস্যজনক অবস্থায় উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। বিহার সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্র এই মামলার তদন্ত তুলে দিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। যার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সিবিআই এফআইআর দায়ের করেছেন রিয়া চক্রবর্তী সহ তাঁর পরিবারের অন্যতিন সদস্যসহ মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে।
এই মামলায় তদন্তের অধিকার নেই বিহার পুলিশের, এটি তাঁদের জুরিসডিকশনের বাইরে এই দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিলেন রিয়া, এবার সেই পিটিশনের পাল্টা এফিডেভিট (হলফনামা) দাখিল করল বিহার সরকার। সুপ্রিম কোর্টকে নীতিশ কুমার সরকার বলেন, মুম্বই পুলিশ এই তদন্তের কোনওরকম তথ্য বিহার পুলিশের তদন্তকারী দলের সঙ্গে ভাগ করে নেয়নি। এমনি 'জোর করে কোয়ারেন্টাইন’ করে রাখা হয় পাটনার এসপি বিনয় তিওয়ারিকে। যাঁকে এই তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল বিহার সরকারের তরফ থেকে।
এফিডেভিটে আইনজীবী কেশব মোহন উল্লেখ করেছেন, মুম্বই পুলিশের অসহযোগিতা খুব স্পষ্ট এই মামলায়। তাঁরা কোনওরকম ডকুমেন্ট যেমন ইনকুয়েস্ট রিপোর্ট, ময়না তদন্তের রিপোর্ট, এফএসএল রিপোর্ট, সিসিটিভি ফুটেজ কোনওকিছুই দিতে অস্বীকার করে। বারবার পাটনা পুলিশের তরফে অনুরোধ করা হলেও কোনও সদার্থক জবাব মেলেনি।
এই মামলায় মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে এই হলফনামায়। বলা হয়, মুম্বই পুলিশ কেন পিটিশন দায়ের কারীর (রিয়া চক্রবর্তী) পক্ষ নিয়ে কাজ করছে সেই কারণ একমাত্র মুম্বই পুলিশ জানে।
বিহার পুলিশের চার সদস্যের দল মুম্বইয়ে সুশান্ত সিং মামলার সঙ্গে জড়িত মোট ১০ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে। পুলিশের দল সুশান্তের ব্যাঙ্কের তথ্যও যাচাই করে দেখেছে, প্রয়াত অভিনেতার বাবা কেকে সিংয়ের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে। সেখানে ১৫ কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগ এনেছেন কেকে সিং।
কেন সিবিআইয়ের কাছে এই মামলা সঁপে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে বিহার সরকার, সেই কারণও জানানো হয়েছে এফিডেভিটে। যেহেতু এই মামলা তদন্ত সংবেদনশীল এবং বিহার পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এই মামলার সঙ্গে জড়িত প্রচুর তথ্য-প্রমাণ রয়েছে মুম্বই সহ গোটা দেশেই। তবে এই মামলার শাখাপ্রশাখা মূলত ছড়িয়ে রয়েছে দুটি রাজ্যে, তাই বিহারের ডিজিপি বিহার সরকারের কাছে এই মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার আবেদন জানান।
জুরিসডিকশনের বিষয়টিও হলফনামায় অস্বীকার করেছে বিহার সরকার। তাঁদের দাবি এই মামলায় প্রয়াতের বাবা প্রথম এফআইআর দায়ের করেছেন পাটনায়। যেহেতু সুশান্তের বাবা, যিনি সুশান্তের মৃত্যুর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তিনি পাটনার স্থায়ী বাসিন্দা তাই সেই মামলা পাটনা পুলিশ গ্রহণ করেছে। তাছাড়া মুম্বই পুলিশ ১৭৪ সিআরপিসির অধীনে অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করছে, সেই তদন্ত একটা নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ।
এফিডেভিটে আরও যোগ করা হয়-রিয়ার এই পিটিশন দায়ের করা হয়েছে ভুলধারণার উপর ভিত্তি করে তাই সেটি গ্রহণযোগ্য নয়।