সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই টানাপোড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে। মুম্বই পুলিশ এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে বুধবার রাতেই এই মন্তব্য করেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। অন্যদিকে মুম্বই পুলিশের উপর যে আস্থা নেই সুশান্তের পরিবারের তা বেশ স্পষ্ট। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামনে আসে পাটনার রাজীব নগর থানায় প্রয়াত অভিনেতার বাবা কেকে সিং রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, প্রতারণা, ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন। গত ২৫ জুলাই দায়ের হয়েছে এই এফআইআর।
এবার এই মামলায় নতুন করে সুশান্তের দিদির বয়ান রেকর্ড করল মুম্বইয়ে হাজির বিহার পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। সুশান্তের বাবার দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতেই মুম্বইয়ে হাজির হয়েছে পাটনা পুলিশের চার সদস্যের একটি টিম। যাঁরা এই মামলার শুরু থেকে খতিয়ে দেখছে। সুশান্তের দিদি নীতু সিং মুম্বইতেই থাকেন। সুশান্ত ঘরের দরজা খুলছেন না, ১৪ জুন অভিনেতার পরিচারকদের ফোন পেয়েই বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে হাজির হয়েছিলেন তিনি। তাঁর উপস্থিতিতেই ঘরের দরজা খোলা হয়েছিল বলে খবর। তাঁর বয়ানই নতুন করে নথিবদ্ধ করল পাটনা পুলিশ।
বিহার পুলিশের আধিকারিক কাইজার আলাম, যিনি আপতত এই মামলার তদন্তে মুম্বই রয়েছে তিনি বুধবার সাংবাদিকদের জানান মুম্বই পুলিশ এই মামলায় পূর্ণ সহযোগিতা করছে।
সুশান্তের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হিসাবেই তদন্ত করছে মুম্বই পুলিশ। অন্যদিকে পাটনা পুলিশের কাছেই প্রথম এফআইআর দায়ের করা হয়েছে সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তের। দুটি রাজ্যের পুলিশ এই মামলায় জড়িয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ ছাড়া বাকি কোনও রাস্তা দেখছেন না আইন বিশেষজ্ঞরা। যদিও সেই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিলেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনিল দেশমুখ বুধবার রাতে জানান, মুম্বই পুলিশ এই মামলার তদন্ত করতে সম্পূর্নরূপে সক্ষম,তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে এই মামলার দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।
উল্লেখ্য, রিয়া ও অভিনেত্রীর পরিবারের এবং ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত, সুশান্তের সঙ্গে প্রতারণা (আর্থিক ও মানসিক) এবং তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মতো অভিযোগ এনেছেন কেকে সিং। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা), ৩৪১,৩৪২,৩৮০,৪০৬, ৪২০-ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে রিয়া চক্রবর্তী এই মামলা মুম্বইয়ে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানিয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন দেশের শীর্ষ আদালতের।
মুম্বই পুলিশ এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৪১ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে।