বাবা সিদ্দিকির হত্যা নিঃসন্দেহে নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। গত শনিবার নিজের ছেলের অফিসার বাইরেই গুলি চালানো হয় তার উপর। এর পিছনে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণ পেয়েছে মুম্বই পুলিশ। আরও জানা যাচ্ছে, গত মাসে বান্দ্রা এবং তার আশেপাশে বাবা সিদ্দিকিকে হত্যা করার ১০টিরও বেশি ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়েছে।
একজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে ইটাইমসে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘খেরওয়াড়িতে তাঁর (বাবা সিদ্দিকির) ছেলের অফিসের কাছে, হত্যা করার জন্য তাদের বলা হয়েছিল কারণ এটি একটি উন্মুক্ত এলাকা। বিভিন্ন কারণে ওরা এর আগে গুলি চালানোর সুযোগ পায়নি। মাঝে মাঝে, সিদ্দিক আসেননি, এবং যখন তিনি এসেছেন, তখন তারা পরিকল্পনা ত্যাগ করতে বাধ্য হয় কারণ তিনি তাঁর অনেক সমর্থক দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন।’
এদিকে পুলিশ মঙ্গলবার এই মামলার আরও একজন অভিযুক্ত হরিশকুমার নিষাদকে (২৪ বছর বয়স) গ্রেপ্তার করেছে ইউপির কায়সারগঞ্জ থেকে। তাকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। অন্য যে ৩ জনকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তারা হলেনম দুই অভিযুক্ত শুটার — গুরমাইল সিং (২৩) এবং ধর্মরাজ কাশ্যপ (২১) — এবং দুধ ব্যবসায়ী প্রবীণ লোনকার ।
জানা যাচ্ছে, নিষাদ পুনে শহরে পুরনো জিনিস বিক্রির দোকান চালাতেন। পুনে পুলিশের আধিকারিকরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, নিশাদ যে মালিকের কাছ থেকে গত বছর ভাড়ায় দোকান নিয়েছিলেন তিনি জানিয়েছিলেন যে, ২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রেখেছিল নিষাদ তার দোকান এবং তিনি কোথায় গিয়েছিলেন তা তিনি জানেন না। দোকানটা প্রবীণের ডেয়ারির পাশেই। এর আগে নিষাদ তার নিজের জেলা থেকে কিছু যুবককে দোকানে কাজ করার জন্য নিয়ে আসে।
পুলিশ তার কেনা একটি মোটরসাইকেল বাজেয়াপ্ত করেছে যেটি অভিযুক্ত শ্যুটারদের রেইকি করার জন্য দেওয়া হয়েছিল। ‘প্রবীণ একটি সেকেন্ড-হ্যান্ড বাইক কেনার জন্য নিষাদকে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছিল। নিষাদ পুনে থেকে মুম্বই এই বাইকটি চালিয়ে কুরলায় তাদের ভাড়া করা ঘরের কাছে শ্যুটারদের হাতে তুলে দেন। বন্দুকধারীরা বাইকটি সিদ্দিকিকে ফলো করার জন্য ব্যবহার করেছিল। এটা নিষাদের নথি দিয়ে কেনা হয়েছিল’, জানিয়েছেন এক সিনিয়র অফিসার। এমনকী, প্রবীণ লোনকারকে ৪ লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছিল, যা সে শুটার এবং সহ-ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে বিতরণ করেছিল। সিদ্দিকিকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় কথিত বন্দুকধারীরা ফেলে যাওয়া অস্ত্রের একটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ইতিমধ্যে, পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ইঙ্গিত করে যে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার মাধ্যমে অভিনেতা সলমন খানকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিল যে, তাদের উপেক্ষা করা উচিত নয়। দলটি ১৪ এপ্রিল সলমন খানের বান্দ্রার বাসভবনে গুলি চালিয়েছিল। সলমন খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন সিদ্দিক। লরেন্স, বর্তমানে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য বর্তমানে রয়েছেন সবরমতি জেলে।
বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র কৃষ্ণসার শিকারে সলমনের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই, সলমন খানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর পর দাবাং অভিনেতার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। যেদিন বাবা সিদ্দিকির উপর গুলি চালানো হয়, সেদিন বিগ বসের শ্যুট বাতিল করে হাসপাতালে ছুটেছিলেন ভাইজান। এরপর কবর দেওয়ার আগেও, পৌঁছেছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। মিডিয়ায় যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট গোটা ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন বলিউড সুপারস্টার।