মাত্র ৫৭ বছর বয়সে চলে গেলেন বলিউডের জনপ্রিয় আর্ট ডিরেক্টর নীতীন দেশাই। মুম্বইয়ের একটি নিকটবর্তী এলাকায় তিনি আত্মঘাতী হন তাঁর নিজেরই স্টুডিয়োর মধ্যে। ইতিমধ্যেই তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এনডি স্টুডিয়োর মালিক ছিলেন নীতীন। তিনি বুধবার, ২ অগাস্ট এখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রায়গড়ের পুলিশের এসপি সোমনাথ ঘারগে হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন তাঁরা মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি।' কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন পরে এই বিষয়ে তথ্য জানানো হবে।
প্রসঙ্গত নীতীন দেশাই বিজেপি নেতা বিনোদ তাওরের ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই নিকট বন্ধুর এভাবে চলে যাওয়ায় তিনি শোকস্তব্ধ। তিনি নীতীনের চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, 'আমি ওর সঙ্গে মাঝে মধ্যেই কথা বলতাম, ওকে বোঝাতাম। আমি ওকে অমিতাভ বচ্চনের উদাহরণ দিতাম। বলতাম কীভাবে উনি নিজের জীবনে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ওকে এও বলেছি যে যদি তোমার স্টুডিয়ো লোনে ডুবে থাকে তাহলে নতুন করে শুরু করো। ওর মাথায় ২৫২ কোটির ঋণের বোঝা ছিল। মৃত্যুর খবর শুনে ভীষণই খারাপ লাগছে। কিছুদিন আগেই কথা হল।'
তিনি দাপলিতে জন্মগ্রহণ করেন। নীতীন দেশাই বা নীতীন চন্দ্রকান্ত দেশাই মূলত তাঁর শিল্প, তাঁর তৈরি করা ডিজাইন স্টুডিও, ইত্যাদির জন্যই বলিউডে সুপরিচিত ছিলেন। বলিউডে যথেষ্ট পরিচিতি ছিল তাঁর। তিনি একাধিক বড় বাজেট এবং সুপার হিট ছবিতে কাজ করেছেন। জেজে স্কুল অব আর্ট অ্যান্ড এল এস রাহেজা স্কুল অব আর্টস থেকে ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
২০০৫ সালে তিনি তাঁর এনডি স্টুডিয়ো চালু করেন। নবী মুম্বইয়ের করজাতের ৫২ একর জমির উপর তিনি এই স্টুডিয়ো বানিয়েছিলেন। নীতীন মূলত মারাঠি এবং হিন্দি ছবিতে কাজ করতেন। এই দুই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ ছিল। তাঁর তৈরি করা দুর্দান্ত সব সেট, স্টুডিও দেখা গিয়েছে লাগান, হাম দিল দে চুকে সনম, যোধা আকবর, দেবদাস, প্রেম রতন ধন পায়ো, ইত্যাদি ছবিগুলোতে। তাঁর করা অন্যতম সেরা কাজের মধ্যে আছে সালাম বম্বে, আকেলে তুম, আকেলে হাম, ইত্যাদি। ২০১৬ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ার্ল্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালে কাজ করেছিলেন তিনি। তিনি কালার্সের জনপ্রিয় শো বিগ বসের আর্ট ডিরেকশনও দিয়েছেন।
তিনি আর্ট ডিরেক্টরের পাশাপাশি প্রোডাকশন ডিজাইনার হিসেবেও বেশ বিখ্যাত ছিলেন। নীতীন দেশাই আশুতোষ গোয়ারিকর, বিধু বিনোদ চোপড়া, রাজকুমার হিরানি, সঞ্জয় লীলা বনশালি প্রমুখ পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
তিনি ২০০২ সাল থেকে প্রযোজনাও শুরু করেন। সেই বছর তিনি চন্দ্রকান্ত প্রোডাকশন চালু করেন। এই প্রযোজনা সংস্থার তরফে যে ছবিটির প্রথম প্রযোজনা করা হয় সেটি একটি ভক্তিমূলক ছবি ছিল। কাচ অঞ্চলের দেবী মায়ের উপর বানানো এই ছবিটির নাম ছিল ‘দেশ দেবী’।