রাজনীতির জেরে কি ফাটল ধরল রাজ চক্রবর্তী ও রু্দ্রনীল ঘোষের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বে? আপতত প্রকাশ্য রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন টলিউডের এই দুই পরিচিত মুখ। রুদ্রনীল নাম লিখিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে, আর রাজ চক্রবর্তী দীর্ঘদিন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকবার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন চলতি সপ্তাহে। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, তৃণমূল দুই শিবিরেরই তুরুপের তাস হতে চলেছেন রুদ্রনীল ও রাজ। সূত্রের খবর নির্বাচনের টিকিট পেতে পারেন দুজনেই।
রাজনীতির পথ আলাদা, আর সেই প্রভাব পড়ছে বন্ধুত্বেও। শনিবার এক সংবাদ চ্যানেলের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্য তরজায় জড়ালেন রাজ-রুদ্রনীল। শনিবার বঙ্গ রাজনীতি সরগরম ছিল ‘বেটি পরায়া ধন’ এই ইস্যু নিয়ে। সেই বিতর্কেই রাজ একহাত নেন অমিত শাহ-বাবুল সুপ্রিয়দের। এর পালটা জবাব দিতে গিয়ে রাজকে বিঁধে রুদ্রর পালটা প্রশ্ন ‘তাহলে তুই শুভশ্রীর বাড়িতে গিয়ে থাকছিল না কেন?’
নিউজ ১৮ বাংলার এক অনুষ্ঠানে সঞ্চালক রাজের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়র বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট নিয়ে। জবাবে রাজ বলেন, ‘মেয়েদের পরায়া ধন ভাবে বিজেপি, এবং সেটা ভেবে মেয়েদের অসম্মান করে। এবং দেশ যেহেতু আমাদের মা- সেটা শীঘ্রই অন্যদের হাতে দিয়ে দেবে’। রুদ্রনীল আসরে নেমে বলেন, ‘এগুলো বাচ্চা বাচ্চা যুক্তি, এর থেকে ভালো আমি স্ক্রিপ্ট লিখি। তুই তাহলে শুভশ্রীর বাড়িতে গিয়ে থাকছিস না কেন?’ ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন রাজও। তিনি পালটা বলেন, ‘এখানে শুভশ্রী কোথা থেকে এল? তবে আমার অসুবিধা নেই। এর থেকে ভালো কিছু হতেই পারে না। যদি ভালোবেসে আমার শ্বশুর আমাকে রাখে এর চেয়ে ভালো কিছু হয় না। বেটি কোনওদিন পরায়া ধন নয়’।
বাবুল সুপ্রিয় কী পোস্ট করেছেন?
‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’-তৃণমূলের এই নির্বাচনী স্লোগান নিয়ে শনিবার একটি প্রতি কটাক্ষমূলক ফেসবুক পোস্ট করেন বাবুল। সেখানে দেখা যায় মাইক্রোফোন হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং পাশে হিন্দিতে লেখা, ‘ম্যায় বঙ্গাল কি বেটি হুঁ (আমি বাংলার মেয়ে)’?, দ্বিতীয় পোস্টারে অমিত শাহের ছবি এবং পাশে হিন্দিতে লেখা, ‘বেটি পরায়া ধন হোতি হ্যায়, ইস বার বিদা কর দেঙ্গে ( মেয়ে পরের সম্পত্তি, এ বার বিদায় করে দেব)।’ ক্যাপশনে বাবুল লেখেন, ‘কর হি দেঙ্গে ইস বার বিদা’। সঙ্গে জুড়ে দেন হ্যাশট্যাগ পরিবর্তন ইন বেঙ্গল।
রাজ-রুদ্রর বাকযু্দ্ধ এইটুকুতে থেমে থাকেনি। রুদ্রর অভিযোগ, ‘ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে রাজ তুই পালটে গেছিস’। অন্যদিকে হাসতে হাসতে রাজ বলেন, ‘করোনার সময়ও তো তুই মুখ্যমন্ত্রীর কত প্রশংসা করেছিস আর এখন পালটি খেয়ে গেলি’।
উল্লেখ্য, রাজ চক্রবর্তী ও রুদ্রনীল ঘোষের বন্ধুত্বের উদাহরণ টলিউডে সকলে দিত। মাসখানেক আগেও রাজের বাড়ির হাউজ পার্টিতে হাজির ছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। এখন প্রশ্ন হল তবে কি পুরোনো দুই বন্ধুর মাঝেও ঢুকে পড়ল রাজনীতি?