বলিউডের সুপারস্টার হওয়ার পাশাপাশি দীপিকা একজন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। অতএব ছোটবেলা থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠাটা ছিল অসম্ভব নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে দিয়ে। যেমন একজন খেলোয়ারের জীবন যাপন হয় ঠিক তেমনই। আজও সেই রুটিংয়ের এতটুকুও বিচ্যুতি ঘটেনি। প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা দিয়েই দিন শুরু করেন দীপিকা। এমনকি যদি খুব ভোরে শুটিংয়ের কল টাইম থাকে সেক্ষেত্রে শুটিংয়ের বিরতির সময় তিনি ্তাঁর যোগা এবং এক্সরাসাইজ সারেন।
ফিটনেস প্রশিক্ষক ইয়াসমিন-এর কড়া নজরদারি
প্রতিদিন কোনও অজুহাত বা বিলম্ব ছাড়াই নায়িকা অনুসরণ করেন তাঁর ফিটনেস প্রশিক্ষক ইয়াসমিন তাঁকে যে পাইলেট এবং প্রসারিত অনুশীলনের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন সেই সব এক্সরাসাইজ গুলি। অনুশীলনে রোজ ৪ থেকে ৫ টি স্ট্রেচিং ২০ টি রিপস সহ করেন তিনি। জিমে কার্ডিও এক্সরাসাইজ এবং হালকা ওজন উত্তোলনও করেন। দীপিকা বলেন, ‘কাজ করার সময় ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি। জোর করে কাজ করবেন না, আপনার দেহকে বিশ্রাম দিন এবং পুনরুদ্ধার করার জন্য সময় দিন।’ বাড়ির বাগানেই চলে তাঁর রোজকার অনুশীলন।বিভিন্ন আসন তাকে তাজা এবং স্বাস্থ্যকর দেখাতে সাহায্য করে। তিনি প্রতিদিন সকালে প্রায় আধা ঘন্টা করে হাঁটেন।
তাঁর মোমের মত ত্বকের স্নিগ্ধতা বজায় রাখতে
তিনি নিয়মিত স্কিনকেয়ারের উপর নির্ভর করেন। শুটিং বা কমার্শিয়াল কোনও ইভেন্টে যাওয়া ছাড়া মেকআপ এড়িয়ে চলেন দীপিকা। শুটিংয়ের পরে মুখটি পুরোপুরি মেকাআপ মুক্ত করা অতি আবশ্যক। অতিরিক্ত জল খাওয়ার উপর জোর দেন যাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়শ্চারাইজিং তাঁর রুটিং স্কিনকেয়ার। এই গ্ল্যামারাস ডিভা ঘুমানোর আগে মুখ পরিস্কার করে একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। নিয়মিত ফেসিয়াল তিনি করান না, তবে সপ্তাহে একবার পুরোপুরি ক্লিন আপ সেশন করান। নায়িকা তাঁর স্নানের সময় সাবান বা বডি ওয়াশের সঙ্গে একটি লুফাহ দিয়ে মাসাজ করেন। কারণ এটি তাত্ক্ষণিকভাবে রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি করে এবং শরীর থেকে মৃত কোষগুলি সরিয়ে দেয়। দীপিকার মতে, শেষ মুহুর্তের মেকআপ এবং অন্যান্য প্রসাধনী ব্যবহার না করে, ত্বকের জন্য আমাদের নিয়মিত যত্ন করাটা জরুরি, তবেই তো ভিতর থেকে জেল্লাটা ফুটে উঠবে। দীপিকার এই রোজকার চর্চা তাঁকে আজ পর্যন্ত ব্যার্থ করে নি।
দীপিকার হেয়ার কেয়ার মানেই নারকেল তেলের ম্যাজিক
সপ্তাহে একবার স্নেহযুক্ত নারকেল তেল দিয়ে চুলের মালিশ করেন দীপিকা, কারণ সূর্যের দীর্ঘায়িত এক্সপোজারে এবং শ্যুটিংয়ের চড়া আলোতে চুলের নরম ভাব চলে গিয়ে রুক্ষ দেখায়। শৈশবকাল থেকেই এই নারকেল তেল মালিশ প্রক্রিয়া তাঁর চুলের জন্য দুর্দান্তভাবে কাজ করেছে। এছাড়া হেয়ার স্পা এবং শারীরিকভাবে প্রয়োজনীয় ম্যাসাজ ও শিথিলতার জন্য নিয়মিত স্পাতে যান তিনি।
খাওয়া দাওয়া
নায়িকার মতামত অনুযায়ী, 'আপনি কতটা পরিমান খাবেন সেটা বিষয় নয়, আপনি কতটা পরিমান স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন সেটা জরুরী'। দীপিকা খেতে ভালোবাসেন, তাঁকে ডাই-হার্ড ফুডি বলা যেতে পরে। নিজেকে মেন্টেন করতে গিয়ে খাবার এড়িয়ে যাওয়া বা অনাহারে থাকায় তিনি বিশ্বাস করেন না।
ডায়টেশিয়ান পূজা মাখিয়ার ডায়েট অনু্যায়ী দীপিকার ডায়েট
প্রতি দুই ঘন্টা অন্তর খাবারের সময় নিয়মিত করে রেখেছেন তিনি। দীপিকা বিশ্বাস করেন যে,'একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট শক্তিশালী এবং ফিট শরীরের জন্য প্রথম পদক্ষেপ' । তাঁর ডায়েট কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের এক স্বাস্থ্যকর এবং ভারসাম্যপূর্ণ মিশ্রণ।দীপিকা দিনে তিনবার মূল খাবার খান এবং সেক্ষেত্রে প্রাতঃরাশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।
প্রাতঃরাশ— সাদা দোসা, সঙ্গে নারকেল বা পুদিনার চাটনি। কুসুম বাদ দেওয়া ডিম। এবং এক বাটি ফল।
দুপুরের খাবার—একবাটি ডাল, বিভিন্ন রকম শাক, মরশুমি সবজি, একটা হাত রুটি, এবং মুরগি বা মাছের রোস্ট।
রাতের খাবার— হাত রুটি এবং প্রোটিন স্যালাড। এছাড়া সারাদিনে বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন জুস এবং স্যালাড রয়েছে তাঁর খাদ্য তালিকায়।