ভারতের বিয়ারের বাজারে বিপ্লব ঘটানোর কৃতিত্ব অবশ্যই দিতে হবে বিজয় মালিয়াকে। তাঁর ইউনাইটেড ব্রুয়ারিজের আগে বিয়ার ভারতে খুব বেশি প্রিয় পানীয় ছিল না। বর্তমানে ভারতে প্রতি বছর ৪৫ কোটি বিয়ার বিক্রি হয়। মালিয়া চেয়েছিলেন ভারতের বিয়ারের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করতে। তবে এই প্রতিযোগিতায় তাঁকে হারতে হয়েছে এক বলিউড তারকার কাছে। তিনি আর কেউ নন, ড্যানি ডেনজংপা। হিন্দি ছবির এই জাঁদরেল খলনায়ক দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিয়ার ব্র্যান্ডের মালিক। আরও পড়ুন-বনির সঙ্গে আর কখনও ছবি করবেন না ঋত্বিকা! ‘বরবাদ’ নায়কের সঙ্গে প্রেম নিয়েও এল জবাব
ড্যানি ডেনজংপার বিয়ার সাম্রাজ্য
ড্যানি, ১৯৪৮ সালে সিকিমে শেরিং ফিন্টসো ডেনজংপা জন্মগ্রহণ করেন, ১৯৭১ সালে জারুরাত দিয়ে বলিউডে তার কর্মজীবন শুরু তাঁর। বছরের পর বছর ধরে, তিনি লাভ স্টোরি, ঘটক, অগ্নিপথ, খুদা গাওয়াহ, ক্রান্তবীর এবং চায়না গেট সহ হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে একাধিক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। তবে শুধু অভিনয়ে নিজেকে আটকে রাখেননি।
১৯৮৭ সালে, অভিনেতা বিয়ার ব্যবসায় মন দেন। যখন নিজের জন্মভূমিতে ইউকসোম ব্রুয়ারিজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার নিজ শহরের নামানুসারে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়। ২০০৫ সালে তিনি ওড়িশায় ডেনজং ব্রুয়ারিজ প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন। চার বছর পর তিনি আসামের রাইনো এজেন্সি অধিগ্রহণ করেন। ইউকসমের ওয়েবসাইট অনুসারে, ব্র্যান্ডটির বার্ষিক ৬.৮ লক্ষ এইচএল উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। এর ফলে কিংফিশার এবং কিমায়ার পরে ইউকসোম তৃতীয় বৃহত্তম ভারতীয় বিয়ার কোম্পানি হয়ে উঠেছে।
ড্যানি যেভাবে বিজয় মালিয়াকে মাত দিলেন
২০০৯ সালে, ভারতে বিয়ারের বাজার মারাত্মকভাবে প্রসারিত হচ্ছিল। উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিয়ারের মূল ঘাঁটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিজয় মালিয়ার ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ প্রায় গোটা ভারতকে কোণঠাসা করলেও উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যে ঢুকতে পারেনি। তাঁর চোখ ছিল অসমের নতুন মদের কারখানার দিকে। তবে ড্যানি চেয়েছিলেন তাঁর ইউকসম এই বাজারে আধিপত্য বিস্তার করুক। এমএসএন জানিয়েছে, মালিয়ার অধিগ্রহণের পরিকল্পনা শুনে ড্যানি নিজেই রাইনো এজেন্সি কিনে নেন এবং বাজারে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেন। ইউবি কখনও উত্তর-পূর্বে কোনও বিয়ার কারখানা তৈরি করতে পারেনি এবং সেই বাজারে উত্পাদন থেকে দূরেই থাকতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন-'রহমান একদমই মিশুক নয়, কাছে ঘেঁষতে দেয় না', অভিজিৎ-এর পর সুরকারকে নিয়ে বেফাঁস সোনু
ইউসকম ব্রুয়ারিজের অর্থনৈতিক প্রভাব
ইউকসোম কোম্পানির মাধ্যমে নিজের রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে স্থানীয়দের কাজে নেন ড্যানি। সিকিম এক্সপ্রেস ২০২২ সালে জানিয়েছিল যে উত্তর-পূর্বের ব্রিউয়ারিজগুলি (চোলাই কারখানা) ২৫০ জনকে নিয়োগ দেয় এবং প্রতি বছর স্থানীয় অর্থনীতিতে ১০০ কোটি টাকা অবদান রাখে।
ড্যানির সাম্প্রতিক কেরিয়ার
ড্যানি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রুপোলি পর্দা থেকে দূরেই থেকেছেন, পরিবর্তে তাঁর ব্যবসায়ের দিকে মনোনিবেশ করেছেন। বেবি (এবং এর স্পিন অফ নাম শাবানা) এর মতো সফল ছবিতে কাজ করেছেন। তাকে সর্বশেষ ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া অমিতাভ বচ্চন, অনুপম খের এবং বোমান ইরানি অভিনীত ‘উঁচাই’তে একটি ক্যামিও চরিত্রে দেখা গিয়েছিল।