সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু সংক্রান্ত খবর পরিবেশনের সময় সংবাদমাধ্যমকে সংযম বজায় রাখবার নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। এই মামলার তদন্তে ক্ষতি করতে পারে এমন কোনও তথ্য পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকতে সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করল আদালত। যদিও এই নিয়ে কোনওরকম চূড়ান্ত রায় দেয়নি আদালত। পরবর্তী শুনানিতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয় আদালত।
দুটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এদিন এই নির্দেশ দেয় বম্বে হাইকোর্ট। তিনজন সমাজকর্মী ও মুম্বই পুলিশের একাধিক প্রাক্তন আধিকারিকের তরফে বম্বে হাইকোর্টে দুটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পিটিশনে এই মামলায় মিডিয়ার মাধ্যমে দোষী ঠিক করার চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করবার আর্জি জানানো হয়েছিল। মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন আধিকারিকদের আবেদন ছিল, কিছু মিডিয়া চ্যানেল ইচ্ছাকৃতভাবে এই মামলায় মুম্বই পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিচারপতি এএ সৈয়দ এবং বিচারপতি এসপি তাভাড়ের ডিভিশন বেঞ্চে এদিন এই মামলার শুনানি হয়। সমাজকর্মী নীলেশ নভলাখা, মাহিবুব শেখ এবং সুভাষ চান্দেক ছাবা তাঁদের পিটিশনে অভিযোগ করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মামলার বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ অসর্তকভাবে রিপোর্টিং করে চলেছে দিনের পর দিন। তাঁদের আইনজীবীর দলিল ছিল এক্ষেত্রে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইন, ১৯৯৫ অমান্য করা হচ্ছে। তদন্তে যোগ রয়েছে বা তদন্ত সংস্থার নজরে রয়েছে এমন ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। কিছু কিছু চ্যানেলে তো তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই রায় ঘোষণা করা হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ আনেন।
অন্যদিকে মুম্বই পুলিশের একাধিক প্রাক্তন আধিকারিকদের হয়ে আদালতে দলিল পেশ করেন সিনিয়র আইনজীবী মিলিন্দ সাথে এবং চেতন কাপাডিয়া। মুম্বই পুলি্শের প্রাক্তন ডিজিপি, কমিশনার, এটিএস প্রধানের মতো উচ্চ পদমর্যাদার একাধিক আধিকারিকের অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে মুম্বই পুলিশের গায়ে কালি ছেটানো হচ্ছে সুশান্ত সিং রাজপুতের মামলায়।
এদিন ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার তরফে আদালতে হাজির হয়েছিল অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অনিল সিং। তিনি বলেন, বুধবার গভীর রাতে এই পিটিশন তিনি হাতে পান, জবাব তৈরির জন্য তাঁর সময় চাই। এছাড়াও তাঁর বক্তব্য ছিল যেহেতু এই মামলায় মিডিয়া হাউজও যুক্ত, তাই তাঁদেরও পূর্ণ অধিকার রয়েছে আত্মপক্ষ সমর্থনের।
দুই পক্ষের দলিল শুনে অন্তবর্তীকালীন রায় ঘোষণা করে বম্বে হাইকোর্ট। যেখানে সংবাদমাধ্যমকে এই মামলার কভারেজের ক্ষেত্রে সংযম বজায় রাখবার কথা বলা হয়। জানানো হয়, তদন্ত যেভাবে এগোচ্ছে সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন তুলে ধরবার। পিটিশনে যে সমস্ত মিডিয়া চ্যানেলের নাম রয়েছে তাঁদের প্রতিনিধিদের ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির থাকবার এবং নিউজ ব্রডকাস্টার অ্যাসোসিয়েশনকে এই সময়সীমার মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।