চলতি সপ্তাহেই গুজরাট ও মুম্বই উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় তাউট।ঘূর্ণিঝড় তাউটের প্রভাবে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই নগরী। নানা জায়গা থেকে ঝড় ও বৃষ্টিতে জল জমে যাওয়ার ছবি সামনে এসেছে। অমিতাভের মুম্বইয়ের অফিস 'জনক'এর লন্ডভন্ড অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন 'বিগ বি'। জানা গেছিল,তাঁর বাড়িতে জল ঢুকে গেছিল। বান্দ্রায় রণবীরের যে বাড়িটি তৈরি হচ্ছে তাঁর বাইরের রাস্তায় মাটি থেকে শিকড়সহ গাছ উপড়ে পড়েছিল।এমনিতেই করোনার জন্য মহারাষ্ট্রে চলা লকডাউনে পিছিয়ে গিয়েছে ছবির কাজ। মনে করা হচ্ছে, তাউটের প্রভাবে বেশিরভাগ ছবির সেট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আরও বিপাকে পড়লো বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। তবে ঘূর্ণিঝড় টাউটের কারণে সম্ভবত সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রখ্যাত বলি-প্রযোজক বনি কাপুর। অজয় দেবগনের পরবর্তী ছবি 'ময়দান' এর অন্যতম প্রযোজক তিনি। বিশাল বাজেটের এই স্পোর্টস ড্রামার বাজেট এমনিতেই বেড়ে গেছিল গত বছর লকডাউন হওয়ার সুবাদে। এবার টাউটের দাক্ষিণ্যে ছবির বাজেট হতে চলেছে আকাশছোঁয়া। মোদ্দা কথা, বিস্তর ক্ষতির মুখ দেখছেন প্রযোজক বনি কাপুর।
খুলেই বলা যাক বিষয়টা। গতবছর সারা দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার ফলে 'ময়দান' ছবির জন্য তৈরি করা প্রায় ১০ কোটি মূল্যের একটি সেট বাধ্য হয়েই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন বনি। এরপর করণের প্রকোপ কমলে কেন্দ্রের তরফে শ্যুটিংয়ের অনুমতি পাওয়ার পর ফের একবার অবিকল সেরকম ব্যয়বহুল একটি সেট তৈরী করা হয়েছিল বনির খরচে। কারণ ছবির শ্যুটিং বাকি ছিল। সম্প্রতি সময়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় তাউটের ফলে প্রায় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে ওই সেটটি। অথচ এখনও বাকি রয়েছে 'ময়দান'- এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশের শ্যুটিং। তাই বাধ্য হয়েই আরও একবার ওই একই সেট বানাতে হবে বনি কাপুরকে। সবমিলিয়ে একটি নির্দিষ্ট সেটের কারণে খসতে চলেছে বনির ৩০ কোটি টাকা!
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে এই প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অত্যন্ত বিমর্ষভাবে বনি জানিয়েছেন, অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়,' আমি এই ঘটনার কথা মনে করতে চাইনা। অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। পারতপক্ষে মাথা থেকে দূরে রাখছি এই ঘটনার স্মৃতি,নইলে যেকোনও মুহূর্তে চোখে জল চলে আসতে পারে। যদি ক্রমাগত নিজের আর্থিক ক্ষতির কথা ভাবতে থাকি তাহলে আমি নিশ্চিত যে অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়বই। তাই যতটা পারছি ইতিবাচক থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাও ভালো ওই সময় সেটে কেউ ছিলেন না। কেউ মারা যাননি বা করোও আজাকাত লাগেনি। তাহলে দুর্ভোগের শেষ থাকতো না আমার।'
সেট প্রসঙ্গে বনির তরফে জানা গেছে ওই বিরাট সেটে ২৬টি বাথরুমের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছিল ৮টি বাথরুমও। আটটি বহুমূল্য ক্যামেরার সেট আপের সঙ্গে ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতি যা শ্যুটিংয়ে সাহায্য করবে কলাকুশলীদের। নিজের প্রভূত ক্ষতি সমন্ধে গিয়ে বলতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, 'শুধু আমার একার নয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জুড়ে থাকা প্রতিটি মানুষের সর্বনাশ হয়েছে। বিশেষ করে ছবি পেঁয়াজোজকদের তো বটেই। নিজের সমস্যাকে সবারই বড় মনে হয় অন্যের তুলনায়। তবে আমি নিশ্চিত আমার মতো এত বড় ক্ষতি আর কোনও ছবি প্রযোজক এইমুহূর্তে সম্মুখীন হচ্ছেন না।'