পরনে লাল বেনারসি, গায়ে সোনার গয়না, মাথাল লাল চেলি ও মুকুট, এক্কেবারে বাঙালি নববধূর সাজ। তবে এই সাজে নবদ্বীপের পাত্র কার্তিক মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে যিনি বসেছিলেন, তিনি কিন্তু বাঙালি কিংবা ভারতীয় নন। এমনকি কোনও প্রতিবেশী দেশের নাগরিকও তিনি নন। তবে কে তিনি?
তিনি ব্রাজিলিয়ান সুন্দরী ম্যানুয়েলা অলভেস দ্য সিলভা। ভাবছেন তো ম্যানুয়েলা কীভাবে হঠাৎ কার্তিক মণ্ডলের পাত্রী হলেন? তাহলে তাঁদের গল্প খোলসা করেই বলা যাক…
নবদ্বীপের বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডলের সঙ্গে ম্যানুয়েলা অলভেস দ্য সিলভার আলাপ হয় ফেসবুকে। তাও প্রায় বছর ছয় আগে। মেসেঞ্জারে তাঁদের টুকটাক কথাবার্তা হত। ক্রমশ তাঁদের মানসিক বন্ধন গাঢ় হয়। ক্রমে পরস্পরের প্রেমে পড়ে যান কার্তিক-ম্যানুয়েলা। একসময় ব্রাজিলিয়ান এই রমনী ঠিক করে ফেলেন নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গেই ভারতে এসে সংসার করবেন। প্রথমে তাই সুদূর ব্রাজিল থেকে ম্যানুয়েলা এসে হাজির হয়েছিলেন কার্তিক দিল্লির ভাড়া বাড়িতে। আর সেটা জামাইষষ্ঠীর আগের দিন। পরে সেখান থেকে তিনি পৌঁছোন নবদ্বীপের ফরাসডাঙার টিনের চালের বাড়িতে।
এরপর শুক্রবার শুভলগ্নে বাঙালি রীতি মেনেই সাতপাকে ঘুরলেন কার্তিক ও ম্যানুয়েলা। কলকা করা পানপাতায় মুখ ঢেকে শুভদৃষ্টি হল তাঁদের। যদিও ভাষার কারণে বিয়ের মন্ত্রউচ্চারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল ম্যানুয়েলার। বাঙালি পুরোহিতমশাই-এর বলা মন্ত্র স্মার্ট অ্যাপের মাধ্যমে কার্তিক পর্তুগিজ ভাষায় বদলে দিচ্ছিলেন কার্তিক। তবে বাঙালি পুরোহিতের বলা মন্ত্র উচ্চারণ করার চেষ্টা করছিলেন ম্যানুয়েলা।
যদিও ইতিমধ্যেই বাংলা ভাষাটা অল্পবিস্তর রপ্ত করে নিয়েছেন ব্রাজিলের ম্যানুয়েলা অলভেস দ্য সিলভা। এই বিয়েতে তিনি খুশি বলেছেন জানিয়েছেন। এদিকে কার্তিক-ম্যানুয়েলার এই বিয়েতে অমত হয়নি দুই পরিবারেরও। কার্তিকের পরিবারের তরফে ব্রাজিলে ম্যানুয়েলার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা তাঁদের মেয়ের ইচ্ছাতেই সম্মতি প্রকাশ করেছেন বলেই জানা যায়।