বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার পর থেকে বলিউড অভিনেতা সলমন খানের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন মহারাষ্ট্র সরকার। আঁটসাট করা হয়েছে সুপারস্টারের নিরাপত্তা। দম ফেলবার ফুরসৎ নেই মুম্বই পুলিশের। বিষ্ণোই গ্যাং গত এপ্রিলে সলমনের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল, সেই ঘটনার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। তবে গত মাসের ঘটনা সবকিছু ওলোটপালোট করে দিয়েছে।
বিধায়ক পুত্রের অফিসের বাইরে গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দেওয়া হয় রাজনীতিবিদ তথা প্রাক্তন বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে। তদন্তে নেমে সেই হত্যা কাণ্ডের সঙ্গেও বিষ্ণোই গ্যাংসের যোগসূত্র মিলেছে। এর মাঝেই মুম্বই পুলিশের কাজে অনবরত হুমকি ফোন আসছে, বলা হচ্ছ সলমন খানকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
এবার তেমনই এক হুমকি ফোনের সূত্র ধরে এক উঠতি গীতিকারকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম ভাঁড়িয়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেছিল অভিযুক্ত।
পুলিশের দাবি, কর্ণাটকের রায়চুর থেকে ধৃত সোহেল পাশা তাঁর লেখা একটি গান বিখ্যাত করতে চেয়েছিলেন এবং এর জন্যই সোজা সলমন খানকে হুমকি দেওয়ার কৌশলকে কাজে লাগান তিনি। ৭ নভেম্বর মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে একাধিক মেসেজ আসে যেখানে লেখা থাকে যে প্রেরক বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য এবং ৫ কোটি টাকা না দিলে সলমন খানকে মেরে ফেলা হবে। তারা ‘ম্যায় সিকান্দার হুঁ’ গানের রচয়িতাকেও হত্যা করবে বলে প্রেরক হুঁশিয়ারি দেন।
মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ সেই মোবাইল নম্বরটি সন্ধান করেছিল যে নম্বর থেকে ওই হুমকি বার্তা আসে। সেই অনুযায়ী একটি দল কর্ণাটকে পাঠানো হয় এবং ওই নম্বরের মালিক ভায়ঙ্কটেশ নারায়ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু নারায়ণের মোবাইল ফোনে কোনও ইন্টারনেট পরিষেবা ছিল না। পুলিশ তখন জানতে পারে যে তার ফোনে একটি হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টলেশন ওটিপি ছিল।
নারায়ণ পুলিশকে জানিয়েছেন, ৩ নভেম্বর এক অপরিচিত ব্যক্তি বাজারে তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন যে ফোন করার জন্য তিনি নারায়ণের ফোন নিতে পারেন কিনা। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওটিপি পাওয়ার জন্য নারায়ণের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিজের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা চালু করেন অভিযুক্ত। এরপরে ক্রাইম ব্রাঞ্চের দলটি রায়চুরের নিকটবর্তী মানাভি গ্রামে পাশার খোঁজে বার হয়।
তিনি হুমকিতে উল্লিখিত ম্যায় সিকান্দার হুন গানের লেখক আর কেউ নন ওই পাশা। তিনি নিজের গানটি বিখ্যাত করতে চেয়েছিলেন এবং তাই একজন বিখ্যাত ব্যক্তিকে হুমকি বার্তায় নিজের গানের নাম জুড়ে দেন। তদন্তের স্বার্থে পাশাকে মুম্বই এনে ওরলি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের হেল্পলাইন থেকে সম্প্রতি সলমন খানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে কমপক্ষে চারটি বার্তা এসেছে।