সেলিব্রিটিরাও মানুষ। আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতো তাঁদের নাগরিক অধিকার আছে। শুধুমাত্র সেলিব্রিটি বলেই, তাঁদের উপর অতিরিক্ত দায় চাপিয়ে দোষী বলে সাব্যস্ত করা যায় না। এমনই বলল সুপ্রিম কোর্ট। এই মন্তব্যের পিছনে রয়েছে শাহরুখ খানকে কেন্দ্র করে ঘটা একটি ঘটনা। সেই ঘটনা গুজরাটের বদোদরা স্টেশনে একজন মারা যান। শাহরুখের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ২০১৭ সালে ওই স্টেশনে তাঁর কারণে একটি হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। আর সেখানে যেহেতু একজন মারা যান, তার দায় নিতে হবে শাহরুখকেই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, বিষয়টি একেবারেই তা নয়।
এবার আসা যাক, সেই ঘটনার প্রসঙ্গে। কী ঘটেছিল সেদিন?
এটি ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারির ঘটনা। সেই সময়ে ‘রইজ’ ছবির প্রচার করছিলেন শাহরুখ খান। সেই প্রচারের উদ্দেশ্যেই তিনি গুজরাটের বদোদরা স্টেশনে পৌঁছোন। তিনি সেখানে পৌঁছেছিলেন ক্রান্তি এক্সপ্রেসে। সেই সময়ে স্টেশনে একটি মারাত্মক হট্টগোল সৃষ্টি হয়। অগুনতি মানুষ হাজির হয়েছিলেন তাঁকে দেখতে। তখনই ধাক্কাধাক্কিতে বহু মানুষ প্লাটফর্মে পড়ে যান। পদপিষ্ট হয়ে আহত হন অনেকেই। তাঁদের অনেককেই এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
এর মধ্যেই ছিলেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ফারিদ খান পাঠান। তিনি ধাক্কাধাক্কিতে আহত এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই জিতেন্দ্র সোলাঙ্কি নামে কংগ্রেসের এক নেতা বদোদরা আদালতে শাহরুখ খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, শাহরুখ ওই ভিড় লক্ষ্য করে কিছু স্মাইলি আঁকা বল এবং টি-শার্ট ছুঁড়েছিলেন। সেগুলি কাড়াকাড়ি করে নিতে গিয়েই এই গোলযোগ বাঁধে। তাতেই মাটিতে উলটে পড়ে যান অনেকে। এবং এর দায় পুরোপুরি শাহরুখ খানের বলে এফআইআর করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।
এর পরে শাহরুখকে বদোদরা কোর্টে ডাকা হয়। তাঁকে জানানো হয় ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় তিনি অভিযুক্ত। কিন্তু পরবর্তী কালে গুজরাট হাইকোর্ট এই মামলা খারিজ করে দেয়। সোলাঙ্কির আইনজীবী তখন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই প্রসঙ্গেই সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ওই ঘটনার দায় কোনও ভাবেই শাহরুখের উপর বর্তায় না। সেলিব্রিটিরাও সাধারণ মানুষের মতো সব ধরনের নাগরিক অধিকার পেতে পারেন। ফলে এই কোনও দুর্ঘটনার জন্য তাঁদের আলাদা করে দোষী বলে দাবি করা যাবে না। এমনই বলা হল সর্বোচ্চ আদালতের তরফে।