ছবি: ছাবা
অভিনয়ে: ভিকি কৌশল, রশ্মিকা মন্দানা
পরিচালক: লক্ষ্মণ উটেকর
রেটিং: ৩/৫
বীরপুরুষ কবিতায় রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, 'আমি তখন রক্ত মেখে ঘেমে, বলছি এসে লড়াই...', ছাবা ছবিতে শেষ ভাগের কিছু দৃশ্য অজান্তেই বারবার সেই লাইনগুলোর কথা মনে করাল। দুর্বল চিত্রনাট্যে ভর দিয়েও তুখোড় অভিনয় ভিকির। কেমন হল লক্ষ্মণ উটেকরের ‘ছাবা’, জানাচ্ছেন হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা।
ছাবার গল্প
ছত্রপতি শিবাজীর মৃত্যুর পর যখন মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব সবে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছেন তখনই তাঁর ঘুম ওড়ায় ‘ছাবা’ সম্ভাজি। বুরহানপুর দখল করে বুঝিয়ে দেয় সিংহ মরে গেলেও তার 'ছাবা' ঘুরে বেড়াচ্ছে। একদিকে বাবার স্বরাজ গঠন পূরণ করার স্বপ্ন, আরেকদিকে ঔরঙ্গজেব, সঙ্গে রয়েছে নিজের পরিবারের বিশ্বাসঘাতকেরা। সবের সঙ্গে যুঝে কীভাবে লড়াই চালিয়ে যান সম্ভাজি, তাঁর জীবনে শেষ লড়াইয়ে কী কী ঘটে, কোন নিষ্ঠুরতার সঙ্গে তাঁকে মারা হয় সেটাই দেখানো হয়েছে এই ছবিতে।
আরও পড়ুন: পরনে লাল শাড়ি, টোপর! বধূবেশে মনোজ মুরলির বাহুলগ্না দেবলীনা, 'ফের গৌরবের ডিভোর্স?' প্রশ্ন নেটপাড়ার
কেমন হল ‘ছাবা’?
‘ছাবা’ ছবির প্রথম ভাগ বেশ দুর্বল। স্লো। গল্পের বুননও তেমন জমাট নয়। তবে শেষ ভাগে কিন্তু গোটা ছবিটাই বদলে গেল। টানটান গল্প, অ্যাকশনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে ছবির দ্বিতীয় ভাগ। তবে চিত্রনাট্য দুর্বল হলেও নজর কাড়ল গোটা ছবির প্রতিটি অ্যাকশন দৃশ্য। ডিটেলে প্রতিটি অ্যাকশন দৃশ্য দেখানো হয়েছে। কোথাও কোথাও রিপিটেশন মনে হলেও, জলের মধ্যে দিয়ে আচমকা উঠে লড়াই বা গাছ থেকে ঝুলে ঝুলে লড়াই করার দৃশ্য নজর কাড়তে বাধ্য। তালিকায় থাকবে সম্ভাজি মহারাজের জীবনের শেষ লড়াইয়ের সিকোয়েন্সটিও।
তবে এই ছবির নাম যতই ‘ছাবা’ হোক, ভিকি কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনিই এই ছবির ‘শের’। অভিনয়, শরীরী ভাষা মুগ্ধ করেছে। কিছু কিছু জায়গায় তাঁর হাবভাব বইয়ের পাতার শিবাজীর ছবির সঙ্গে হুবহু মিলেছে। তবে তিনি একটার পর একটা ছক্কা হাঁকিয়েছেন ছবির শেষ ভাগে এসে। এই ছবির শেষ দৃশ্যে তাঁর অভিনয় মনে থাকবে বহুদিন। তবে তাঁর একার নয়। রশ্মিকা মন্দানা বা আশুতোষ রানাও নিজ নিজ চরিত্রে যথাযথ। বিশেষ করে ভিকির বলার কায়দার সঙ্গে মিলিয়ে রশ্মিকা যেভাবে প্রতিবার 'জগদম্বা' বলেছেন সেটা বাহবা পাওয়ার যোগ্য।
অক্ষয় খান্নাও তাঁর চরিত্রের সঙ্গে জাস্টিস করেছেন যে বলাই যায়। নির্লিপ্ত মুখে নিষ্ঠুরতা, ক্রুরতা দেখিয়েছেন গোটা ছবি জুড়ে। তবে ‘ছাবা’য় প্রপস বা অল্প বিস্তর এক্সপ্রেশনের জন্য রাখা হয়েছিল ডায়না পেন্টির চরিত্রকে। ছবির এডিটিংও বেশ নিম্নমানের। কিন্তু আবার শেষ দৃশ্যে থাকা কবিতা, বা কিছু সংলাপ ভালো লাগবে।
কিন্তু এই ছবির আরেকজন হিরো আছে ভিকি কৌশল ছাড়া। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। প্রতিটি দৃশ্যের সঙ্গে জীবন নেপথ্য সঙ্গীত বদলে যাচ্ছিল সেটা তারিফযোগ্য। ফলে ট্রেলার যতটা আশা জাগিয়েছিল সেই পর্যায় ছবি না গেলেও মোটের উপর একবার দেখলে মন্দ লাগবে না।