‘সিনেমা হল কি জিম?’ এদিন এমনই প্রশ্ন ছুড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সিনেমা হলে বাইরে খাবার নিয়ে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন নিয়ে দায়ের পিটিশনের শুনানি চলছিল এদিন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পি.এস নরসিনহার ডিভিশন বেঞ্চ হয় মামলার শুনানি। যা চলাকালীন আদালত প্রশ্ন করে বসে, ‘ছবি দেখতে গেলে এবার কি জিলিপি নিয়ে যাব?'
শীর্ষ আদালত এদিন সাফ জানায়, হল মালিক এবং মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের পূর্ণ অধিকার রয়েছে বাইরের খাবার বা পানীয় নিয়ে প্রবেশ করা যাবে কি যাবে না, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এদিন জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের তরফে সিনেমা হলে বাইরের খাবার ও পানীয় নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ‘সিনেমা হল জিম নয় যে সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবারের দরকার। সেটা বিনোদনের জায়গা। সিনেমা হল ব্যক্তিগত প্রপার্টি। সেখানকার মালিক ঠিক করবেন সেখানে কি নিয়ে প্রবেশ করা যাবে আর যাবে না। হ্যাঁ, বন্দুক নিয়ে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না বা জাতি-ধর্ম-বর্ণের নিরিখে কারুর সঙ্গে ভেদাভেদ করা যাবে না-এটা খুব ভালো। তবে হাইকোর্ট কি করে বলতে পারে যে বাইরের খাবার নিয়ে হলে ঢোকা যাবে?’
সিনেমা হলের অন্দরে শিশুদের জন্য বিনামূল্য জল এবং খাদ্য বিতরণের ব্যাপারে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেটা অতিরিক্ত বলেও পর্যবেক্ষণ দেশের শীর্ষ আদালতের। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানায়, দর্শক সিনেমা দেখবেন কিনা সেটা ঠিক করা তাঁদের অধিকার এবং সিনেমা হলে প্রবেশের পর কর্তৃপক্ষের নিয়মই চূড়ান্ত। হলে খাবার খাওয়া হলে সেটি পরিষ্কারের টাকা কে দেবে পালটা প্রশ্ন করে বসেন প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘কেউ জিলিপি খেয়ে চিটচিটে হাতটা সিটে মুছলে সেটা কে পরিষ্কার করবে? তন্দুরি চিকেন খেয়ে মাংসের হাড়গুলো হলে ফেলে আসলে সেটা কে সাফ করবে?' দর্শককে সিনেমাহলে পপকর্ন কিনতে বাধ্য করা হয় না, সেটা কেনা অথবা না কেনা- দর্শকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।