ধ্রুপদী সঙ্গীতের জগতে নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন আগ্রা ঘরনার সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত বিজয়কুমার কিচলু। বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছিলেন শিল্পী। শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী। পদ্মশ্রী-র পাশাপশি সঙ্গীত নাটক আকাদেমি-সহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন পণ্ডিত কিচলু। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমি তৈরিতে তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রণী।
এদিন শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে তড়িঘড়ি শিল্পীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, চিকিৎসরা চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। ১৯৩০ সালে উত্তরাখণ্ডের আলমোরায় জন্মে ছিলেন পণ্ডিত বিজয় কিচলুর। শৈশবে নাথুরাম শর্মার কাছে গানের শিক্ষা শুরু, এরপর মইনুদ্দিন দাগর ও আলিমুদ্দিন দাগরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ইতিহাসে স্নাতক পণ্ডিত কিচলু ১৯৫৫ সালে ব্রিটিশ শিপিং কোম্পানিতে চাকরিসূত্রে কলকাতায় আসেন। এরপর এই শহরকে আপন করে নিয়েছিলেন। আজীবন তিলোত্তমাই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। অল্প-সময়ের মধ্যেই বাংলার সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠেছিল তাঁর। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির জনক ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন পণ্ডিত বিজয় কিচলু।
আট দশক দীর্ঘ তাঁর সঙ্গীতজীবন। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী পণ্ডিত বিজয় কিচলুর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।…. অগণিত নবীন শিল্পী তাঁর প্রশিক্ষণে আজ লব্ধপ্রতিষ্ঠ। তাঁর প্রয়াণে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।’
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার (আগামিকাল) রবীন্দ্র সদনে বেলা ১২টা থেকে শায়িত থাকবে তাঁর মরদেহ। সেখানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন অগণিত গুণমুগ্ধ ভক্তা ও ছাত্রছাত্রীরা। তাঁর পর হবে শেষকৃত্য। পুত্র রোহিত কিচলু জানান, ‘বাবা সঙ্গীতের সাধক ছিলেন। সঙ্গীতের জন্যই সারাটা জীবন অর্পণ করে গেলেন’।