সংসদীয় রাজনীতিতে ১০ বছর পার করে ফেলেছেন তিনি। ঘাটাল থেকে তৃণমূলের টিকিটে তৃতীয়বার ভোটের ময়দানে টলিউড সুপারস্টার দেব। মাসখানেক আগে ভোটে না লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন টলিউডের ‘প্রধান’। কিন্তু দিদির ‘টনিক’-এ মত বদলান তারকা। জানিয়ে দেন, তিনি রাজনীতি ছাড়তে চাইলেও রাজনীতি তাঁকে ছাড়ছে না। আরও পড়ুন-ভোট নিয়ে ব্যস্ত রচনা, IPL-এ সৌরভ! হুড়হুমুড়িয়ে কমলো দাদা-দিদির নম্বর, বাজিমাত জলসার
ঘাটালে হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে দেব, তাঁর পথের কাঁটা সহকর্মী হিরণ। টলিউডের 'ব্যর্থ নায়ক'-এর বিরুদ্ধে দেবের লড়াই কতটা সহজ কিংবা কঠিন তা নিয়ে কাটা ছেঁড়া জারি রয়েছে। তবে নিজের আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করেন দেব, তাই বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে কোনওরকম কটূক্তি করতে না-রাজ ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী। কারণ দেব সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। সেই কারণেই প্রচারসভায় দাঁড়িয়ে জোর গলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে শুভেচ্ছা জানাতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেন না তিনি।
ঘাটাল তো বটেই, তৃণমূলের তারকা প্রচারক হিসাবে বাংলার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন দেব। প্রচার সারছেন বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, হাওড়ায়। প্রচারের ফাঁকে এক সংবাদচ্যানেলের স্টুডিও হাজির হয়েছিলেন দেব। মন খুলে কথা বললেন নির্বাচন নিয়ে। এবিপি আনন্দের তরফে দেবের সামনে প্রশ্ন ছোঁড়া হয় বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ঘিরে। সম্প্রতি প্রচারসভায় মিঠুনকে ‘গদ্দার’ বলে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেবের সঙ্গে মিঠুনের সুসম্পর্ক কারুর অজানা নয়। পর্দায় বাবা মিঠুনকে বাস্তবেও পিতৃ স্থানীয় আসনে বসিয়েছেন দেব। সেই মিঠুন সম্পর্কে মমতা বলেছেন, ‘এই মিঠুন চক্রবর্তীকে আমি রাজ্যসভার এমপি করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না এই মিঠুন চক্রবর্তী আরেকজন বড় গদ্দার’। এই মন্তব্য শুনে কী বলতে চাইবেন দেব? স্ট্রেট ব্যাটে খেললেন অভিনেতা। তিনি বলেন, 'আমার এই শব্দ খুব একটা ভালো লাগে না। তুমি দিদির এই ফুটেজটা দেখালে, তুমি মোদীজির ফুটেজটাও দেখাও, যেখানে উনি ‘দিদি ও দিদি বলছেন… যে ইভ টিসিংটা হচ্ছে… প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় একজন লোক, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলছেন। হাজার হাজার মানুষ মঞ্চ থেকে তোমার কথা শুনছে, সেটা দিদি হোক বা দাদা হোক। নির্বাচন এলেই আমরা হিন্দু-মুসলিম হয়ে যাই। আমি এই শব্দগুলোর বিরুদ্ধে, আমি এই আচরণের বিরুদ্ধে, এই ব্যবহারের বিরুদ্ধে। কিন্তু ইলেকশন কমিশনে যাঁরা আছেন তারা তো কোনও….(ব্যবস্থা নিচ্ছেন না)।’
প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের আওতায় ডেকে পাঠানো হয়েছে দেবকে। গরু পাচার মামলায় ইডির নজরে দেব। অভিনেতা জানালেন, ইডি আধিকারিকরা তাঁর প্রতি অত্যন্ত ভদ্র ব্যবহার করেছেন জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে। কেন্দ্রীয় সংস্থা পলিটিক্যাল পার্টি দ্বারা ইনফ্লুয়েসন্ড, বললেন দেব। যা দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে মোটেই আশারা আলো দেখাচ্ছে না। ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নিয়ে ছবি বানাতেও আগ্রহী তিনি। 'এনামুল হককে আমি চিনি না, আলাপই নেই', গোরু-পাচার বিতর্কে সাফাই দেবের।
দেব স্পষ্ট বলেন, ‘১০ বছরে আমি দুটো নির্বাচনে জিতেছি। সেটা আমি ভালোবাসা দিয়ে জিতেছি। কোনও অপশব্দ ব্যবহার করিনি। তাহলে ভালোবাসা দিয়েও নির্বাচন জেতা যায়’। অভিনেতাকে রাজনীতিতে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা। দেব বলেন, '২০১৪ সালে যখন প্রথম প্রার্থী হিসেবে টিকিট পাই, জানতাম ই না পলিটিক্স কি জিনিস, একজনের কথাতেই তখন ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম, আর তিনি হলেন ‘শ্রীকান্ত মোহতা’।