দেশের শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর’ টুইটের জন্য ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করলেন কমেডিয়ান কুণাল কামরা। আদালতের তরফে নোটিশ জারি করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলা হয়েছিল কমেডিয়ানকে। সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া জবাবি হলফনামায় শুক্রবার কুণাল কামরা সাফ করেন, ‘বিচারব্যবস্থার প্রতি জণগণের আস্থা নির্ভরশীল বিচারব্যবস্থার নিজস্ব কাজকর্মের উপর, সমালোচকরা কী বলছে সেটা অর্থহীন’।
‘ক্ষমতাশালী মানুষজন কিংবা প্রতিষ্ঠান কী তাদের বিরুদ্ধে ওঠা প্রশ্ন বা সমালোচনার মুখোমুখি হতে ব্যর্থ? এইভাবে তো আমার কারাবন্দি শিল্পী এবং ল্যাপডগ সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হব’, এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য নিজের হলফনাফায় করেন কুণাল। আজই সুপ্রিম কোর্টে কুণালের বিরুদ্ধে আদালত অবমানার মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তার কয়েকঘন্টা আগেই হলফনামায় একথা জানালেন কমেডিয়ান। আজ বিচারপতি অশোক ভূষণ ও আর সুভাষ রেড্ডি এবং এআর সাহের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
কুণাল কামরা আরও জানান, যদি আদালত বিশ্বাস করে সীমা লঙ্ঘন করেছেন কুণাল, এবং তাঁর ইন্টারনেট পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিতে চান, তাহলে তিনি ‘হ্যাপি ইন্ডিপেনডেন্স ডে পো্স্ট কার্ড’ লিখবেন প্রত্যেক ১৫ অগস্ট ঠিক তাঁর কাশ্মীরি বন্ধুদের মতো।
গত ১৮ ডিসেম্বর স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরা এবং কার্টুনিস্ট রচিতা তানেজার বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ জারি দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচার-ব্যবস্থা এবং বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অবজ্ঞাপূর্ণ মন্তব্য করবার অভিযোগ রয়েছে দুজনের বিরুদ্ধে। গত বছর নভেম্বর মাসেই কুণালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করার অনুমতি দিয়েছিলেন সরকারের সর্বোচ্চ আইন অফিসার অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেনুগোপাল। অর্ণব গোস্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর কুণাল কামরা যে মন্তব্য করেছিলেন টুইটারে সেই নিয়েই শুরু বিতর্ক। অর্ণবকে বেল দেওয়ার সময় ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রসঙ্গ উঠেছিল। সেই বিষয় নিয়েই পালটা জবাব দিয়েছিলেন কুণাল।
নিজের হলফনামায় কমেডিয়ান মুনাওয়ার ফারুকির জামিনের আর্জি খারিজ করা নিয়ে ফুঁসে উঠেন কুণাল। তিনি লেখেন, ‘আমরা দেখছি বাক স্বাধীনতা ও অভিব্যক্তি প্রকাশের অধিকারের উপর নির্যাতন চলছে। মুনাওয়ারের মতো কমেডিয়ানরা জেলবন্দি সেই জোকস-এর জন্য যা সে উচ্চারণও করেনি, আর স্কুল ছাত্রদের জেরা করা হচ্ছে দেশদ্রোহের মামলায়’।