‘জীবনের প্রতিটি দিন উদ্যাপনে মেতে থাকবে। আমার মৃত্যুর পর কেউ যেন শোক না করে’, মজার ছলেই এই কথা স্ত্রীকে অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন রাজু শ্রীবাস্তব। তবে শেষবেলায় চোখের জল বাঁধ মানলো না। ‘হাসির রাজা’র বিদায়বেলায় মনভার সবার। প্রায় দেড় মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়বার পর বুধবার না-ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন ‘গজধর ভাইয়া’। ভারতে স্ট্র্যান্ড আপ কমেডির ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন যারা, তাঁদের অন্যতম রাজু শ্রীবাস্তব।
বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লিতে পরিবার ও প্রিয়জনদের উপস্থিতিতে পঞ্চভূতে লীন হলেন এই কৌতুকাভিনেতা। বুধবারই রাজুর মরদেহ তুলে দেওয়া হয়েছিল পরিবারের হাতে। দিল্লির দ্বারকার বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ শায়িত রাখা হয়েছিল তাঁর মরদেহ। এরপর সাদা ফুলে মোড়া অ্যাম্বুলেন্সে করে বৃহস্পতিবার সকালে নিগামবোধ ঘাটে অন্ত্যেষ্টির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রাজু শ্রীবাস্তবকে।
শেষযাত্রায় রাজুর সঙ্গী হলেন তাঁর কাছের বন্ধু সুনীল পাল, এয়সান কুরেশি, পরিচালক মধুর ভাণ্ডরকর, গায়ক রাম শঙ্কররা। কমেডিয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়েছিল তাঁর গুণমুগ্ধ ভক্তরাও। রাজুর পুত্র আয়ুষ্মান তাঁর মুখাগ্নি করেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে রাজুর ভাই দীপু জানিয়েছেন, ‘কানপুর, লখনউ থেকে আমাদের পরিবারের লোকজন এসেছেন। দাদার এতো ভক্তরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, এই ভালোবাসায় আমরা কৃতজ্ঞ’।
বুধবার দিল্লি AIIMS-এ ৪১ দিনের লড়াইয়ে ইতি টেনে পরপারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন রাজু শ্রীবাস্তব। গত ১০ই অগস্ট জিমখানায় ট্রেডমিলে দৌড়ানোর সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাজু, এরপর দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ জ্ঞান ফেরেনি তাঁর, পরে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফের ভেন্টিলেশনে রাখা হয় রাজুকে।
আশির দশকের শেষ থেকেই শোবিজ দুনিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ রাজু শ্রীবাস্তব। তবে ২০০৫ সালে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ’-এর সুবাদে রাতারাতি তাঁর জনপ্রিয়তা শিখরে পৌঁছেছিল। এই কমেডিয়ান রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী শিখা, দুই সন্তান- অন্তরা এবং আয়ুষ্মানকে।