সোশ্যাল মিডিয়া সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে নিঃসন্দেহে মানুষের কাজে লাগে। গত কয়েকদিনে তা বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছে ভারতীয়রা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশের নানান প্রান্তে ভেঙে পড়েছে চিকিত্সা পরিকাঠামো। হাসপাতালে অমিল বেড, নেই উপযুক্ত অক্সিজেনের সরবরাহ, এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কোভিড আক্রান্তদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সেলেব্রিটি, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার থেকে আম জনতা।
বুধবার দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের অন্যতম প্রখ্যাত ধ্রুপদী সংগীত শিল্পী, পদ্মভূষণ পন্ডিত দেবু চৌধুরীর শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে ফেসবুকে-টুইটারে সাহায্য প্রার্থনা করেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ‘গুমনামী’ পরিচালক লেখেন-'পদ্মভূষণ পন্ডিত দেবু চৌধুরীর অবস্থা সংকটজনক। কেউ কি দিল্লির কোনও হাসপাতালে একটা বেডের ব্যবস্থা কিংবা একটা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে পারবেন?'
বহু মানুষই সৃজিতের পোস্টে মন্তব্য করে খোঁজ দেওয়ার চেষ্টা করেন। বহু নেটিজেনরাই নিজেদের মতো করে পন্ডিতজিকে মেডিক্যাল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এক জনৈক টুইটারে লেখেন, পন্ডিত দেবু চৌধুরির পুত্রের সঙ্গে কথা জানা গিয়েছে তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা একদম কমে গিয়েছে, তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। বহু চেষ্টার পর বাড়িতেই একটি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে হয়ত আগামিকাল তাঁকে কোনও হাসপাতালের আইসিইউ-কে ভর্তি করতে হবে।
১৯৩৫ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ময়মন সিংহে জন্ম দেবু চৌধুরীর। খুব অল্প বয়সেই সেতার বাজানোর প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু দেবু চৌধুরীর। মাত্র ১৮ বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিও-কে প্রথমবার তাঁর অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কৃতী ছাত্র দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার মিউজিক বিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি। সেতারবাদাক উস্তাদ মুস্তাক আলি খানের এই গুণী ছাত্র গত বছরই নিজের গুরুর নামে দিল্লিতে একটি মিউজিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন।
দেশে-বিদেশের নানান জায়গায় ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের মাহাত্ম্য পৌঁছে দিয়েছেন ৮৫ বছর বয়সী এই সেতারবাদক। মার্কিন মুলুকে চব্বিশ ঘন্টায় ২৪টি সিডি-র জন্য রেকর্ডিং সেরে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। রবি শংকরের সমসমায়িক হয়েও সেতারপ্রেমীদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ভারতীয় মার্গ সংগীতে তাঁর অবদানের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত তিনি।