না ফেরার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রয়ে গেল তাঁর কাজ। এবং তাঁকে ঘিরে অসংখ্য স্মৃতি। তাঁর স্নেহধন্য বাম নেতা তথা অভিনেতা দেবদূত ঘোষ এদিন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করতে বসে একাধিক অজানা কথা ধরেন। সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান তিনি কেন কখন আর কী মিথ্যে বলেছিলেন তাঁকে।
বুদ্ধদেবকে নিয়ে কী জানালেন দেবদূত?
এদিন দেবদূত ঘোষ স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে জানান তিনি একবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে মিথ্যে বলেছিলেন। তবে সেটা বাধ্য হয়েই। কিন্তু কী ঘটেছিল? স্মৃতি হাতড়ে অভিনেতা বলেন 'শান্তি ঘটকের স্মৃতিতে আমরা একটা মঞ্চ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলাম একবার। গ্রিনরুমে আমি আর উনি বসেছিলাম তখন। বিকেলে তখন টিফিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে আমাদের জন্য। র চা খেতে খেতে উনি এক প্যাকেট সিগারেট বের করে আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। আমি তো পুরো আঁতকে উঠেছিলাম। বড়দের সামনে তখনও সিগারেট খাওয়ার চল ছিল না। যদিও আমি তখন অল্পবিস্তর সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু ওঁর সামনে সিগারেট খাব না বলেই মিথ্যে বলেছিলাম যে আমি সিগারেট খাই না।'
দেবদূত আরও জানান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সময় প্রতিদিন রাতে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে রাতে দেখা করতে আসতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দেবদূতের কথায়, 'সমস্ত বিষয়ে উনি আড়াল থেকে উৎসাহ দিতেন। গোবিন্দ নিহালানি, শ্যাম বেনেগালের পাশাপাশি বিদেশি পরিচালকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রকাশ্যে আসতে চাইতেন না। নেপথ্যে থাকতেই ভালোবাসতেন। উৎসাহ দিতেন।'
দেবদূত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রসঙ্গে আরও জানান, ' উনি অত্যন্ত শিক্ষিত, ভদ্র এবং সৎ মানুষ ছিলেন। কখনও কারও সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলেননি। ওঁকে দেখেই আমার রাজনীতিতে আসা। বামপন্থীদের কাছে রোল মডেল ছিলেন তিনি। আত্মত্যাগী রাজনীতি করে গিয়েছেন গোটা জীবন ধরে।'
আরও পড়ুন: কেবল ভাত - মাংস বা সিগারেট নয়, এই পদ পাতে পেলেই সবথেকে খুশি হতেন বুদ্ধদেব! কী বলুন তো?
আরও পড়ুন: মৃত্যুর পরেও ধনঞ্জয়ের ফাঁসির জন্য বুদ্ধদেবকেই দুষলেন কবীর সুমন! লিখলেন, 'খুব মনে পড়ছে আপনাকে...'
প্রসঙ্গত গত ৮ অগস্ট সকাল ৮টা ২০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এদিন তাঁর মরদেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হয়। ৯ অগস্ট পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হবে তাঁকে। নীল রতন সরকার হাসপাতালে দান করা হবে তাঁর দেহ।