নারায়ণ মূর্তির পর এসএন সুব্রহ্মণ্যম, আজব নিদান শিল্পপতির! সম্প্রতি লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যম মন্তব্য 'রবিবারেও কর্মীদের কাজ করা উচিত। আর তাতেই বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। এর আগে ইনফোসিসের চেয়ারম্যান নারায়ণমূর্তি কর্মীদের ৭০ ঘণ্টা কাজ করতে বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। আর এবার এসএন সুব্রহ্মণ্যম বলছেন ৯০ ঘণ্টা কাজের কথা। এমন মন্তব্যে শিল্পপতির তুমুল সমালোচনা করেছেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দিপ্পি।
ঠিক কী লিখেছেন দীপিকা?
সাংবাদিক ফায়ে ডি'সুজার পোস্ট শেয়ার করে দীপিকা লেখেন, 'এত সিনিয়র পদে থাকা লোকজনকে এমন মন্তব্য করতে দেখে অবাক লাগছে। #MentalHealthMatters (মানসিক স্বাস্থ্য়ের বিষয়টি সত্যিই চিন্তার)। নেটপাড়ায় নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে দীপিকার পোস্ট। অনেকেই দীপ্পির সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন।
ঠিক কী বলেছেন এল অ্যান্ড টি চেয়ারম্যান?
কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথোপকথনের সময়, সুব্রহ্মণ্যন কর্ম-সংস্কৃতি নিয়ে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখিত যে আমি কর্মীদের রবিবার কাজ করতে বলতে পারি না। আমি যদি আপনাদের রবিবারও কাজ করাতে পারতাম তাহলে খুশিই হতাম। কারণ, আমি নিজেও রবিবার কাজ করি।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি ঠিকএরপরই বলেন, ‘বাড়িতে এতক্ষণ বসে কী করবেন? কতক্ষণ বউ-এর মুখের দিকে তাকিয়ে বসে থাকা যায়! তার থেকে অফিসে যান, গিয়ে কাজ শুরু করুন।’
ঠিক এরপরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁর এই মন্তব্যটি ভাইরাল হয়। শিল্পপতির এমন মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই তাঁর এধরনের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
‘ওয়ার্ক লাইফ ও পার্সোনাল লাইফ ব্যালান্স’ অর্থাৎ পেশা ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমতা নিয়ে বহুবার বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়। আর এর সঙ্গে উঠে আসে মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গও। আর ঠিক তখনই শিল্পপতির এহেন মন্তব্যে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর
এদিকে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়ে HT.com এক বিবৃতিতে লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর মুখপাত্র বলেন, 'এল অ্যান্ড টি-তে জাতি গঠন আমাদের ম্যান্ডেটের মূল বিষয়। আট দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা ভারতের পরিকাঠামো, শিল্প এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতাকে রূপদান করে চলেছি। আমরা এমন একটি সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি যেখানে সম্মিলিত অগ্রগতির জন্য আরও উৎসাহ প্রয়োজন। আর তাহলেই আমাদের দেশ সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নত দেশ হয়ে উঠতে পারবে। আমাদের চেয়ারম্যানের মন্তব্য এই বৃহত্তর উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, জোর দিয়ে যে অসাধারণ ফলাফলের জন্য অসাধারণ প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এল অ্যান্ড টি-তে, আমরা এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি যেখানে আবেগ, উদ্দেশ্য এবং কর্মক্ষমতা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়।
ফের প্রতিক্রিয়া দীপিকার
সমালোচনার মুখে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর বিবৃতির পর আরও বিরক্ত দীপিকা পাড়ুকোন। তিনি ফের নিজের প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘এঁরাই আসলে দেশের কর্ম-সংস্কৃতি আরও নষ্ট করছে।’
মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় দীপিকা
দীপিকা পাড়ুকোন বহুদিন হল ভারতে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতন তা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি নিজেও নিজের জীবনে হতাশার সঙ্গে লড়াই করেছেন। আর তারপর থেকেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন দিপ্পি। মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ও সাহায্যের জন্য ২০১৫ সাল থেকে তিনি লাইভ লাভ লাফ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।