ছবি: খাদান
অভিনয়ে: দেব, যিশু সেনগুপ্ত, অনির্বাণ চক্রবর্তী, বরখা বিস্ত, ইধিকা পাল, স্নেহা বসু, সুজন নীল মুখোপাধ্যায়
পরিচালক: সুজিত দত্ত রিনো
রেটিং: ৪.৩/৫
খাদানে দেবের Swag মেয়েবেলার স্মৃতি আর নস্টালজিয়া দুই-ই উসকে দিল। ছবির গল্প কেমন, কতটাই বা জমল শ্যাম, মোহনের রসায়ন জানাচ্ছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
খাদান ছবির গল্প
ওপার বাংলা থেকে সর্বস্ব খুইয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে এপারে এসে মোহনের বন্ধুত্ব জমে শ্যামের সঙ্গে। একজনের বুদ্ধি আরেকজনের গায়ের জোর মিলিয়ে কোলিয়ারি অঞ্চলে নিজেদের দাপট তৈরি করে তাঁরা। অনেকটা রবিন হুড স্টাইলে মানুষের মন জয় করে তাঁরা সেই অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি দুই-ই তৈরি করে। গল্পে একে একে এন্ট্রি নেয় শ্যাম আর মোহনের স্ত্রীরা, আদিবাসী নেতা মান্ডি এবং ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতা সিদ্দিকি। এমন সময় একটি কেসে ফেঁসে লকাপে যেতে হয় শ্যামকে। লকাপেই আত্মহত্যা করে সে। নাকি খুন হয়? এই জবাব ছবিই দেবে। তারপর...? সেটা নিয়েই এই ছবির গল্প।
কেমন হল খাদান?
গল্পের বাঁধুনি আরও একটু ভালো হলেও হতে পারত, সেইটুকু বাদ দিলে আগাগোড়া পয়সা উসুল মশলা মুভি বলতে যা বোঝায় খাদান ঠিক তাই। কেবল কলকাতার দর্শক নয়, এই ছবি যে বাংলার প্রতিটা মানুষের কথা ভেবে বানানো হয়েছে এবং বিপুল অর্থ খরচ করে বানানো হয়েছে সেটা ছবিটির প্রতিটি দৃশ্য বুঝিয়েছে। কী নেই? নাচ, গান, ড্রামা, অ্যাকশন সবই বিদ্যমান খাদনে। শুধু তাই নয় প্রযোজক যেন বুঝিয়ে দিলেন, বলিউড বা দক্ষিণ পারলে বাংলাও পিছিয়ে নেই।
দেব যে কেবল বিভিন্ন ধরনের ছবি করছেন সেটাই নয়, তিনি প্রতিটি ছবিতে নিজেকে আরও বেটার প্রমাণ করছেন। খাদান ছবিতে তাঁর দুটো চরিত্রের সোয়্যাগ দেখার মতো। যিশু যে জানিয়েছিলেন বিড়ির সিনে অভিনেতা ৫০-৫৫ বার ঠোঁট পুড়িয়েছেন কেবল সেই সোয়্যাগ তুলে ধরার জন্য, সিনেমা দেখে বলতেই হয় সেটা 'ওয়ার্থ ইট'! অ্যাকশন থেকে নাচ কিংবা অভিনয় সবেতেই এই ছবিতে দেবের থেকে চোখ সরানো যায়নি। কোথাও কোথাও দেবকে দেখে সেই পুরোনো দেবের কথা মনে পড়বে। যদিও আজকালকার চলতি ভাষায় বলতে গেলে ব্যাপারটা সেম সেম বাট ডিফারেন্ট!
যিশু সেনগুপ্তকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলবার আছে? সাদামাটা কীর্তন গায়কের যে এতগুলো শেড হতে পারে সেটা তিনি নিখুঁত ভাবে তুলে ধরেছেন। তবে অবাক হতে হয় অনির্বাণ চক্রবর্তীর অভিনয় দেখে। কেবল লুক বদল নয়, শরীরী ভাষা থেকে কথা বলার ধরন সবটাই পাল্টেছেন ছবির জন্য এবং একই সঙ্গে মান্ডি চরিত্রটির যতটুকু যা করার ছিল ভীষণ পরিপাটি ভাবে করেছেন।
তবে বরখা এতদিন পর পর্দায় ফিরে সেই অর্থে দাগ কাটতে পারলেন না। বরং ভীষণই ফ্যাকাশে লাগল তাঁর চরিত্র। অন্যদিকে ইধিকা দেবের রসায়ন কিন্তু ফাটাফাটি! চরিত্রটির যে সারল্য মাখা চুলবুলি ব্যাপারটা দরকার ছিল সেটা তিনি তুলে ধরতে পেরেছেন। জন, সুজন নীল সহ বাকিরাও নিজ নিজ চরিত্রে যথাযথ।
তবে খাদানের অন্যতম ইউএসপি যে এই ছবির গান সেটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। ড্যান্স নম্বর বলুন বা কীর্তনাঙ্গের গান কিংবা স্যাড সং প্রতিটির কথা, অ্যারেঞ্জমেন্ট, কম্পোজিশন কেবল ভালো নয়, বেশ ভালো! রথিজিৎ ভট্টাচার্য এবং নীলায়ন চট্টোপাধ্যায়ের এর জন্য অবশ্যই বাহবা প্রাপ্য।
আরও পড়ুন: 'ও সাইজ বুঝতে পারে না', বিয়ের বছর ঘুরতে চলল, কাঞ্চনের নামে কী অভিযোগ করলেন শ্রীময়ী?
আরও পড়ুন: নিন্দকদের মুখে ছাই দিয়ে একসঙ্গে অভিষেক-ঐশ্বর্য! ডিভোর্সের জল্পনা উড়িয়ে জুটি বেঁধে গেলেন কোথায়?
খাদান ছবির গল্পে যেমন টুইস্ট আছে তেমন বেশ কিছু জায়গা প্রেডিক্টেবল। তবুও সেগুলো অভিনেতাদের অভিনয় বা গল্প বলার ধরনে সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায়। প্রথম দৃশ্যে দেবের মুখের ভিতর থেকে জ্বলন্ত বিড়ি বের করা হোক বা কয়লা ভর্তি ট্রেন লুটে খাদানের মধ্যে দিয়ে যিশুকে নিয়ে বাইক চালানোর দৃশ্য বা শেষ দৃশ্যের টুইস্ট নজর কাড়বেই। আর হ্যাঁ খাদান টু আসছে!
ফলে এই শীতের ছুটিতে গোটা পরিবারকে নিয়ে যে হইহই করে এই ছবি দেখতে যাওয়া যায় সেটা বলতেই পারি।