প্রয়াত অরুণ রায়। নতুন বছরেই নক্ষত্রপতন টলিউডের আকাশে। বাঘাযতীন করার সময়েই তাঁর ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছিল। বিগত কয়েকদিন ভর্তি ছিলেন আরজি করে। ২ তারিখ বৃহস্পতিবার ভোররারতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানা যাচ্ছে।
সম্প্রতি ফুসফুসে সংক্রমণের কারণেই আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বুধবার রাতেই হাসপাতাল থেকে খবর এসেছিল, শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে তাঁর। ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছে পরিচালককে। ছিলেন আইসিইউ-তে।
সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় কেমো নেওয়ার পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, কিন্তু মারণরোগ ক্যানসার তাঁর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা একেবারেই কেড়ে নিয়েছে। এর জেরেই গত কয়েকদিনে দ্রুত বিগড়েছে শারীরিক পরিস্থিতি। সম্প্রতি পরিচালককে দেখতে আর জি কর হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন পর্দার ‘বাঘা যতীন’ দেব। আশা ছিল, সব লড়াই জিতে হাসিমুখে ফিরে আসবেন তিনি। তবে তা আর হল না।
অভিনেতা বিরসা দাশগুপ্ত বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘এটা ঠিক করলে না অরুণ দা’। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী লেখেন, ‘পরিচালক অরুণ রায় আর নেই। নতুন বছরের দ্বিতীয় সকালে চলে গেলেন সব মায়া ছেড়ে। যে অরুণ দাকে আমরা চিনি, সেই অরুণদা থেকে যাবেন আমাদের মনের ভিতর- ঠাট্টা, ইয়ার্কি, সিনেমা দেখা আর সিনেমার আলোচনা নিয়ে। জীবনের সবচেয়ে কঠিন বিষয়কেও মজা করে কাটিয়ে দেওয়ার মত সাহস ছিলো তাঁর। শুধু যদি একটু নিয়ম, একটু সংযম… যাই হোক।’
২০১১ সালে ‘এগারো’ ছবির সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে আত্মপ্রকাশ পরিচালক অরুণ রায়ের। ‘হীরালাল’ দিয়েই সিনেপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। এই সিনেমা দিয়েই খ্যাতি পান ডাক্তার অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসা মানুষটা এরপর বানান ‘বিনয় বাদল দীনেশ’। তাঁর বানানো শেষ ছবি ‘বাঘাযতীন’। এখানেও তিনি হিট। তবে আর সিনেমা বানাবেন না এই মানুষটা, যা নিঃসন্দেহে এক বড় ক্ষতি বাংলা সিনেমা, বাংলা সিনেমার দর্শকদের, সর্বোপরি বাঙালি জাতির।
গত এক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়েছেন অরুণ হাসিমুখে। বাঘাযতীন মুক্তি পেয়েছিল ২০২৩-এর দুর্গাপুজোয়। তাঁর ঠিক আগেই ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর জানতে পারেন তিনি। তবে এই মারণ রোগের থাবাতেও ভয় পাননি। বরং হাসিমুখে জানিয়েছিলেন, অসুস্থতা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন একেবারে। ঘাযতীনই এখন তাঁর ধ্যানজ্ঞান। ক্যানসারের ব্যাপারটা চিকিৎসকরা দেখে নেবেন। শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাস ছিল প্রবল।
দেব ছাড়াও পরিচালককে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন জিতু কমল, সৃজা দত্তরা।