বলিউডের মাদকচক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন করণ জোহরের ধর্মাটিক এন্টারটেনমেন্টের কর্মচারী ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ। এই গুরুতর অভিযোগে গত শনিবার এনসিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছে ক্ষিতিশ। যদিও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর নামেই পালটা দায় চাপানোর চেষ্টা করলেন অভিযুক্ত। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এই অভিযোগ আগেই এনেছিলেন। এবার অভিযুক্তের দাবি ধর্মা প্রোডাকশনের কর্ণধার করণ জোহর ও সংস্থার অনান্য এক্সিকিউটিভদের নাম জোর করে তাঁর মুখ দিয়ে বলানোর চেষ্টা করছে এনসিবি। কাস্টডিতে তাঁর উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে-এমনটাও অভিযোগ তাঁর। রবিবার আদালতে নিজের জামিনের আর্জিতে একথা জানান ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ। যদিও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে এনসিবি জানায়- তাঁরা পেশাদার তদন্তকারী সংস্থা, এবং নিয়ম মেনেই তদন্ত করছে তাঁরা।
শুক্রবার এনসিবির দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল ক্ষিতিশ রবি প্রসাদকে। তবে তার আগেই সাত সকালে ধর্মার এই কর্মচারীর বাড়িতে হানা দেয় এনসিবির একটি টিম। নেতৃত্বে ছিলেন সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে। প্রায় চার ঘন্টা ধরে ক্ষিতিশের বাড়িতে চিরুনি তল্লাশি চালায় এনসিবি। এরপরই তাকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দেয় ব্যালাড এসস্টেডের অফিসে। এরপর ক্ষিতিশকে আটক করে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এনসিবির প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি করণ জোহরের কোম্পানিতে কর্মরত এই ব্যক্তি। এরপরই শনিবার বিকালে ক্ষিতিশকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমকে জানায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। কাস্টডির আবেদনে আরও বলা হয়, প্রসাদ জেরার সময় গাঁজা কেনার কথা মেনেও নিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে ধর্মাটিক এন্টারটেনমেন্টের এই কর্মচারী তাঁর কৌঁসুলি সতীশ মানেসিন্ধে মারফত কোর্টকে জানান- এনসিবি চাইছে করণ জোহরকে অকারণে ফাঁসিয়ে দিক ক্ষিতিশ। যদিও এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর মুথা অশোক জৈন এই ধরণের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও ভুয়ো বলে উড়িয়ে দেন। জানান- ‘সব কাজ আইনের আওতায় করা হচ্ছে’।
মানেসিন্ধে কোর্টকে আরও জানান- ‘ক্ষিতিশকে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে’ বয়ান লেখার জন্য। রবিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পেশ করা হয় ক্ষিতিশকে।
মূলত এনসিবির মুম্বই ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন মানেসিন্ধে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনজীবী জানান- ‘সমীর ওয়াংখেড়ে নাকি ক্ষিতিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে যদি সে নিজের জবানবন্দিতে করণ জোহর এবং বাকি সকলের নাম বলে দেয় মিথ্যাভাবে যে তাঁরা ড্রাগ সেবন করে। তাঁর মক্কেলের উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করা হলেও এই কাজ সে করেনি বলে জানান মানেসিন্ধে’।
তবে কাজে আসেনি মানেসিন্ধের কোনও দলিল। উল্লেখ্য, ধর্মা প্রোডাকশনের এই এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসারের জামিনের আর্জি খারিজ করেছে আদালত। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষিতিশ রবি প্রসাদের এনসিবি হেফাজত মঞ্জুর করেছে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট।
অন্যদিকে করণ জোহর নিজের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্ষিতিশ সম্পর্কে জানান ব্যক্তিগতভাবে তিনি ক্ষিতিশকে চেনেন না। কেজো যোগ করেন- 'আমি অথবা ধর্মা প্রোডাকশন কেউই দায়ী নই কোনও মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে কী করছে তার জন্য। এটা ধর্মার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নয়। ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ ধর্মাটিক এন্টারটেনমেন্ট (ধর্মার সহযোগী সংস্থা) যোগ দেয় ২০১৯-এর নভেম্বরে এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসাবে- চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছিল তাঁর'।