বলিউডের মাদককাণ্ডে গতকাল এনসিবির হাতে গ্রেফতার হন করণ জোহরের প্রযোজনা সংস্থা ধর্মা প্রোডাকশনের এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ। আজ তাঁকে পেশ করা হল আদালতে। গতকালই ক্ষিতিশের মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছিল এনসিবি। আজ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পেশ করা হলে তাঁকে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এনসিবির হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
রিয়া চক্রবর্তী ও শৌভিক চক্রবর্তীকে মাদক পাচার করতেন যেসব ড্রাগ পাচারকারীরা তাদের জেরায় উঠে আসে ক্ষিতিশ রবি প্রসাদের নাম। আদালতকে এদিন এনসিবি জানায় এই মামলার গুরুত্বপূর্ন লিঙ্ক ক্ষিতিশ। অভিযুক্তর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি রোল জয়েন্ট উদ্ধার করেছে এনসিবি, যা গাঁজা সেবনের পরের অবশিষ্ট অংশ।
এই মামলায় গ্রেফতার অভিযুক্ত মাদক পাচারকারী সঙ্কেত প্যাটেল জেরায় জানিয়েছে সে অপর অভিযুক্ত কারামজিত সিং (গ্রেফতার)-এর নির্দেশে ক্ষিতিশের অন্ধেরির বাড়িতে উইড স্লাপাই করেছে। বলিউডের অন্দরের পরিচিত মাদক পাচারকারী হিসাবে উঠে আসছে কারামজিতের নাম, যে শৌভিক চক্রবর্তীর বন্ধু।
মে ২০২০ থেকে জুলাই ২০২০-র মধ্যে ১২ বার ক্ষিতিশ রবিপ্রসাদের বাড়িতে নিষিদ্ধ মাদক স্লাপাই করেছে সঙ্কেত। এবং প্রতি বার ৫০ গ্রাম গাঁজা সংগ্রহ করার পর ৩,৫০০ টাকা পেমেন্ট হিসাবে দিয়েছে করণের সংস্থায় কর্মরত এই অভিযুক্ত, জানিয়েছে এনসিবি।
শুক্রবার এনসিবির দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল ক্ষিতিশ রবি প্রসাদকে। তবে তার আগেই সাত সকালে ধর্মার এই কর্মচারীর বাড়িতে হানা দেয় এনসিবির একটি টিম। নেতৃত্বে ছিলেন সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে। প্রায় চার ঘন্টা ধরে ক্ষিতিশের বাড়িতে চিরুনি তল্লাশি চালায় এনসিবি। এরপরই তাকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দেয় ব্যালাড এসস্টেডের অফিসে। এরপর ক্ষিতিশকে আটক করে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এনসিবির প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি করণ জোহরের কোম্পানিতে কর্মরত এই ব্যক্তি। এরপরই শনিবার বিকালে ক্ষিতিশকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমকে জানায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। কাস্টডির আবেদনে আরও বলা হয়, প্রসাদ জেরার সময় গাঁজা কেনার কথা মেনেও নিয়েছেন।
ক্ষিতিশকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ধর্মার এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার বলেন- ‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে’। এই বক্তব্য ধরা পড়েছে টাইমস নাওয়ের ক্যামেরায়।
বলিউডের মাদককাণ্ডের ধর্মা প্রোডাকশনের নাম জড়ানোর পর শুক্রবার রাতে সাফাই পেশ করেন করণ জোহর। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তিনি জানান-- 'আমি অথবা ধর্মা প্রোডাকশন কেউই দায়ী নই কোনও মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে কী করছে তার জন্য। এটা ধর্মার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নয়। ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ ধর্মাটিক এন্টারটেনমেন্ট (ধর্মার সহযোগী সংস্থা) যোগ দেয় ২০১৯-এর নভেম্বরে এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসাবে- চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছিল তাঁর'।
ক্ষিতিশ ছাড়াও এই মামলায় নাম জড়িয়েছে ধর্মা প্রোডাকশনের প্রাক্তন কর্মচারী অনুভব চোপড়ার। শুক্রবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকালে তাঁকে ছেড়ে দেয় এনসিবি।ফের সমন করা হবে তাঁকে খবর এনসিবি সূত্রে।
অন্যদিকে রবিবারই গোয়া থেকে মুম্বইয়ে ফিরছেন ধর্মা কর্ণধার করণ জোহর।