বয়স সবে এক বছর এক মাস। ফুটফুটে মেয়েটা কোনওদিন হাঁটতে-চলতে পারবে কি না, বাঁচবে কি না সেই ভাবনাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে বাবা-মা'কে। জিনগত বিরল রোগে আক্রান্ত রানাঘাটের একরত্তি অস্মিকা! রোগের নাম স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যট্রফ্রি টাইপ-১। এই রোগ থেকে অস্মিকাকে বাঁচাতে প্রয়োজন একট ইনজেকশনের, যার দাম ১৬ কোটি টাকা! আরও পড়ুন-বউয়ের বিরুদ্ধে আনেন মারধর-হেনস্থার অভিযোগ, লিভ ইনের পর সুদীপাকে বিয়ে, অগ্নিদেবের ১ম স্ত্রীকে চেনেন?
মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অস্মিকা, তাঁর বাবা-মা'র পক্ষে এই টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। অগত্যা ক্রাউড ফান্ডিং একমাত্র ভরসা অস্মিকার বাবা-মা'র। রাতে দু-চোখের পাতা এক করতে পারেন না এই দম্পতি। বুকের ভিতরটা সারাক্ষণ ঢিপ ঢিপ করছে মেয়েকে নিয়ে। অস্মিকার সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন অনেক তারকাও। নিজেদের মতো করে জনগণের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়েছেন শ্রাবন্তী, ইমনরা।
কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর রটে যায়, অস্মিকার চিকিৎসায় এবার সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন অরিজিৎ সিং। গায়কের দিল দরিয়া স্বভাব কারুর অজানা নয়। তিনি অস্মিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সে কথা শুনে আশ্বস্ত হন অনেকেই। কিন্তু সত্যি কি অরিজিৎ সিং অর্থ সাহায্য করেছেন অস্মিকাকে? এই প্রসঙ্গে সত্যিটা ফাঁস করেছেন খুদের বাবা।
সম্প্রতি সমাজ মাধ্যম প্রভাবী সায়ক হাজির হয়েছিলেন অস্মিকার বাড়ি। খানিক আফসোসের সুরেই অস্মিকার বাবা জানান, ‘অনেকের একটা ভুল ধারণা হয়েছে। অনেকে ভাবছে বড় বড় শিল্পী, যেমন অরিজিৎ সিং স্যার আমাদের সাহায্য করেছে। সেটা করেনি। কিছু পেজ আছে যারা ভুলভাবে এই খবরটা রটিয়েছে যে অরিজিৎ সিং আমাদের সাহায্য করেছে। বা ওর ট্রিটমেন্টের জন্য টাকা দিয়েছে। তোমার (সায়ক) ভিডিয়োর মাধ্যমে আমি তো চাইব এই বার্তাটা ওঁনার কাছে যাক, অরিজিৎ সিং যদি আমাদের সাহায্য করেন তাহলে তো খুবই ভালো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কোনও আশ্বাস বা মেসেজ আমাদের কাছে আসেনি’।
সায়কও খানিক আশ্চর্য হয়ে যান এই বিষয়টা শুনে। তবে অস্মিকার বাবা এবং সায়কের বিশ্বাস অরিজিৎ সিং-এর কানে অস্মিকার কথা পৌঁছালে নিশ্চয় তিনি সাহায্যের হাত বাড়াবেন।
অস্মিকার বাবা বলেন, গত ৬ মাস ধরে মেয়ের চিকিৎসার জন্য ক্রাউড ফান্ডিং চালাচ্ছেন তাঁরা। প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষ অস্মিকার চিকিৎসায় অর্থ সাহায্য করেছেন। এর ফলে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা জোগাড় হয়েছে। তবে এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। অস্মিকার চিকিৎসার জন্য এখনও প্রতি মাসে লাখ লাখ খরচ করছেন তাঁর বাবা।
প্রতি মাসে অস্মিকার একটি ওষুধ লাগে, যার মূল্য ৬ লক্ষাধিক টাকা। জিন থেরাপির মাধ্যমে অস্মিকার শরীরে বাসা বাঁধা স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যট্রফ্রি টাইপ-১-এর চিকিৎসা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন অরফ্যান ড্রাগ। যা ভারতে মেলে না। আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান দেশে তৈরি হয় বিশেষ এই ওষুধ, যার দাম ৯ কোটি টাকা! আনার খরচ, ট্যাক্স সব মিলিয়ে দাম দাঁড়ায় ১৬ কোটি টাকা। জন্মের দু-বছরের মধ্যেই শিশুকে দিতে হয় এই ইনজেকশন। সুতরাং অস্মিকার হাতে আর খুব বেশি সময় নেই। সেই দুশ্চিন্তাতেই ভুগছেন তাঁর বাবা-মা।