বুধবার থেকে ফের চেনা ছন্দে ফিরেছে টলিপাড়া। আবারও স্টুডিও পাড়ায় হাত ধরাধরি করে চলতে শুরু করেছে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে কেটেছে জট। তাঁর হস্তক্ষেপেই ফেডারেশন বনাম পরিচালকদের যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল তা মিটেছে। কিন্তু এর মাঝেও কোথাও কোথাও ঘটেছে ছন্দপতন। দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এমন পরিস্থিতিতে দিগন্ত বাগচীর বিরুদ্ধে উঠেছে পরিচালকদের ‘অপমান’ করার অভিযোগ। এবার সেই প্রসঙ্গ নিয়েই মুখ খুললেন অভিনেতা।
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন দিগন্ত। বর্তমানে তাঁকে ছোটপর্দায় বেশি দেখা গেলেও, বড় পর্দাতেও তিনি বহু কাজ করেছেন। ফেডারেশন বনাম পরিচালকদের যে দ্বন্দ্ব বেঁধেছিল সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন দিগন্ত। আর তাঁর সেই বক্তব্য থেকেই অভিযোগ তিনি নাকি পরিচালকদের অপমান করেছেন।
আরও পড়ুন: আবারও বলিপাড়ায় শোকের ছায়া! ৬৯-এ প্রয়াত বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক রাজেশ মিত্তল
ফেসবুকে ভিডিয়ো পোস্ট করে সেই বিষয়ে খোলাখুলি নিজের কথা জানালেন অভিনেতা। তিনি বলেন, 'আমি অতন্ত্য সাধারণ একজন নগণ্য অভিনেতা। কিন্তু সম্প্রতি আমি শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু কথা বলেছিলাম। সেটা শুনে আমার বেশ কিছু পরিচালক ও প্রযোজক বন্ধু আমাকে ফোন করেন বলেন, এই কথার মাধ্যমে নাকি পরিচালকদের অপমান করা হয়েছে। কিন্তু আমি পরিচালকদের কোনও ভাবে অপমানিত করতে চাইনি। পরিচালকদের অপমান করার মতো সাহসও নেই আমার। আমি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম, প্রায় ২৫ বছর হতে চলল, আমার এই সামান্য ক্ষুদ্র অভিনয় জীবনের। অভিনয়ের চেষ্টায় আমি সারাজীবন সবাইকে সম্মান দিয়ে গিয়েছি। কীভাবে শট দেব, সবসময় সহযোগিতা করেছি, জিজ্ঞাসা করেছি পরিচালকদের যে আমার কাজ ঠিক হয়েছে কিনা, আজও টেলিভিশন বলুন বা সিনেমা আমার কাজটা ঠিক হল কিনা, সঠিক ভাবে করতে পারলাম কিনা তা জানতে চাই। এভাবেই সহযোগিতা করে এসেছি। কাউকে অপমান করার সাহস দেখাইনি। কারণ আমার সেই সাহস নেই, সেই যোগ্যতাও নেই।'
আরও পড়ুন: ‘বঞ্চনা আর যন্ত্রনা…’, ওটিটিতে নেই সুযোগ, দর্শকের জন্য শেষমেষ কোথায় ভটভটি রিলিজ করছেন তথাগত?
তিনি সংযোজন করেন, 'আমি যেটা বলেছিলাম তাঁর মাধ্যমে পরিচালকদের কোথায় অপমান করা হয়েছে আমি সেটা বুঝতে পারিনি। আমি সম্পূর্ণ শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে এই কথা বলেছিলাম। আমি কিন্তু কখনও অন্য কোনও মানে করে বলিনি। এটার মানেটা হয়তো পালটে যাচ্ছে বা যাঁরা শুনেছেন তাঁদের হয়তো কোনও কারণে খারাপ লেগেছে। যে সমস্ত পরিচালকদের মনে হচ্ছে যে আমি আহত করেছি তাঁদের সবার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী যে, আমার সেই সাহস নেই। আমি কাউকে অপমান করিনি।'
এর সঙ্গেই দিগন্ত তাঁর আগের বলা কথার অর্থও বুঝিয়ে বলেন। তাঁর বক্তব্য, 'আমরা পার ডে আর্টিস্ট। আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে আমরা খেতে পাব না। আমাদের সমস্যা অন্য জায়গায়। আমাদের জন্য তিন দিন কাজ বন্ধ মানে বিপদজ্জনক। আমরা টেলিভিশন করে খাই। আমাদের পারিবারিক একটা চাপ থাকে। বাড়িতে আমার মা খুব অসুস্থ। আমার একটাই বক্তব্য যে টেলিভিশন বন্ধ হয়েছিল। সেটা বন্ধ হলে আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। কিন্তু এর মাধ্যমে আমি কোনও পরিচালকে অপমান করতে চাইনি।'
দিগন্ত ভিডিয়োটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, 'প্লিজ কেউ ভুল বুঝবেন না। মনে হল এটা বলা প্রয়োজন। কোনও পরিচালককে অপমান করার সাহস আমার নেই। এমনকী শিল্পী বা কলাকুশলী আমি কাউকেই অসম্মান করিনি।'