চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই তিন বছর পূর্ণ করছে ‘কেদারনাথ’। পরিচালক অভিষেক কাপুরের এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা মিলেছিল প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতকে। অন্যদিকে এই ছবির সঙ্গেই বলিউড সফর শুরু করেছেন সইফ কন্যা সারা আলি খান। সুশান্তকে খুব স্নেহ করতেন পরিচালক অভিষেক কাপুর, দুজনের সম্পর্কের বন্ধনটা সেই ‘কাই পো ছে’-র সময় থেকেই মজবুত। সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে ‘কেদারনাথ’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন পরিচালক। তাঁর কথায়, তিনি বাধ্য হয়েছিলেন নিজের টাকা খরচ করে কেদারনাথের কাজ শেষ করতে কারণ শেষমুহূর্তে এই ছবি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল বিনিয়োগকারীরা। পরিচালক জানান, তাঁরা জানিয়েছিল- ‘সুশান্ত স্টার নয়’।
২০১৩ সালের উত্তরাখণ্ডের ভয়ঙ্কর বন্যার প্রেক্ষাপটে তৈরি ‘কেদারনাথ’। মনসুর আর মুক্কুর অপূর্ণ প্রেমের আখ্যান মন ছুঁয়েছে সকলের। ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে অভিষেক গট্টু কাপুর বলেন, ‘এটা খুবই অদ্ভূত। লোকজন কেদারনাথ ছেড়ে চলে যাচ্ছিল কারণ তাঁদের কথায় সুশান্ত নাকি স্টার ছিল না। আমি কিন্তু লড়াই করে গেছি, আমাকে নিজের পকেট থেকে টাকা দিতে হয়েছে ওই ছবিটা শেষ করতে। আমার উপর প্রচুর চাপ ছিল, কিন্তু আমি লক্ষ্যে অবিচল ছিলাম, আমার ভরসা ছিল’।
অভিষেকের আক্ষেপ জীবদ্দশায় সুশান্ত কোনওদিন জানতেই পারেনি ওকে কত মানুষ ভালোবাসে। ‘যখন কেদারনাথ তৈরি করছিলাম, আমি জানতাম সুসান্ত কষ্টে আছে। যখন সুশান্ত মারা গেল, গোটা দুনিয়া ওর ফ্যান হয়ে গেল। কিন্তু সবসময় ছবিটা তেমন ছিল না। এমন একটা সিস্টেম ছিল যেটা ওকে কোনওদিন বিশ্বাস করতে দেয়নি ওকে সবাই কতটা ভালোবাসে। ও নিজের যোগ্য মর্যাদা পায়নি। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে ওর মৃত্যুর পর গোটা দেশে যে বিপর্যয়টা নেমে এসেছিল, এবং সবাই ওকে কতটা ভালোবাসে সেটা সবাই ঘোষণা করতে শুরু করেছিল’।
কেদারনাথের তিন বছর পূর্তিতে সুশান্তকে নিয়ে মন ছোঁয়া পোস্ট লেখেন পরিচালক। ইনস্টাগ্রামে তিনি জানান, সুশান্ত একজন ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি’ ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন। নিজের কাজের প্রতি সুশান্তের ভালোবাসা আর আত্মত্যাগ ছিল তার কোনও তুলনা হয় না। তিনি লেখেন, 'আমি আজও মনসুরকে অনুভব করি পবিত্র পর্বতের ওই পাড়ে, হয়ত ও আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখছে ওর ওই উজ্জ্বল হাসিমাখা মুখটা নিয়ে, যেখানে ধরা পড়ে এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্পাপ সৌন্দর্য।
সারা আলি খানও নিজের প্রয়াত কো-স্টারকে স্মরণ করে লেখেন, ‘মনসুরকে আমি বড্ড মিস করছি আজ’। সারা যোগ করে, ‘সুশান্তের সাপোর্ট না থাকলে কোনওদিন, নিঃস্বার্থ সাহায্য, নিয়মিত গাইডেন্স আর সহমর্মিতায় ভরা উপদেশ না থাকলে মুক্ক কোনওদিন আপনাদের মনে ঘর করে নিতে পারত না’।