‘শিল্পীর মৃত্যু হয় না’, নিজের কাজের মধ্যে দিয়েই বেঁচে থাকেন আজীবন। সেরকমই মৃত্যুর পরও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যেন রয়ে গিয়েছেন বাঙালির মনে-প্রাণে। ‘৬১ গড়পার লেন’য়ের স্মৃতি হাতড়ালেন পরিচালক ঈপ্সিতা রায় সরকার। এই ছবির যৌথ পরিচালনায় ছিলেন রাজেশ দত্ত এবং ঈপ্সিতা। ২০১৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি।
প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? হিন্দুুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পরিচালক ঈপ্সিতা রায় সরকার বলেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায় একজন মহীরূহ। তাঁর ছায়ায় অনেকটা প্রশান্তি। সেইটাই পেয়েছি। শুনেছিলাম, কম কাজ করতেন শেষের দিকে। কিন্তু কম কাজ করলেও, যেটুকু করেছেন আমাদের পূরণ করে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: বিকট গরমে সোয়েটার-মাফলার পরলেন পরাণ, জুলাইয়ে ঈপ্সিতা-রাজেশের ‘সার্কাসের ঘোড়া’
‘একটা ছোট্ট ডাবিংয়ের কথা মনে পড়ে, ওঁনার একটা দৃশ্য (৬১ গড়পার লেন) ছিল.. ওঁনার সেইটা শেষ দৃশ্য ছিল ছবিতে। তারপর উনি মারা যাবেন… যেখানে উনি অসুস্থতা বোধ করবেন। ওই চরিত্র করার সময় ডাবিংয়ের ক্ষেত্রে, উনি পুরো ডাবিং করার পর বললেন, 'এইটা আমি আরও সুন্দর করে করতে চাই। পরের দিন আবার ডাবিংয়ে আসব।’
‘সেদিন উনি করেই দিতে পারতেন, এতটাই পরিপূর্ণতায় ভরপুর মানুষ। তবে উনি বললেন, ‘গলাটা সেভাবে সঙ্গ দেবে না। আমি কালকে এসে করব।’ আসলে উনি হয়তো চেয়েছিলেন, ওইটুকু অংশ অন্যভাবে বলতে। অনেকক্ষণ ডাবিং করার পর ওঁর তাই মনে হয়েছিল। আসলে অত বড় মাপের একটা মানুষ, একটু এদিক ওদিক হলে বুঝে ওঠাও সম্ভব নয়। বিষয়টা নগণ্য ছিল। তবে ওঁর কাছে চরিত্রটাই বড়, দৃশ্যটা জরুরি ছিল। আবার পরের দিন এসে ওই টুকু অংশের ডাবিং করেছিলেন।'
‘সেইটা আমার কাছে অবাক, আশ্চর্যের লেগেছিল। এত বড় মাপের একটা মানুষ, যাঁকে নির্দেশনা দেওয়ার মতো কিছুই নেই। বার বারই শেখার ব্যাপার রয়েছে, সেখানে দাঁড়িয়েও আপস করতে দেখেছি ওঁকে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করা আমার কাছে পরম সৌভাগ্যর। উনি আর নেই, তবে এই ছবিই থেকে যাবে মানুষের মনে..’।