পেশাদার টেনিস থেকে অবসর নিলেন রজার ফেডেরার। তার সঙ্গে শেষ হল টেনিসের একটি যুগের। হালে তাঁকে অবসর জীবনের শুভেচ্ছাবার্তা এবং তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার টুকটাক স্মৃতিচারণে ভরে গিয়েছে ইন্টারনেট। বলিউডের প্রচুর তারকাও এই ধরনের স্মৃতিচারণ করেছেন। কিন্তু হালে এ সব কিছুর মধ্যে একটি মজার ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন বাঙালি পরিচালক সুমন ঘোষ। সেটিকেও ফেডেরারের সঙ্গে তাঁর স্মৃতিচারণই বলা যায়। তবে তার ধরনটি একটু আলাদা।
কী লিখেছেন সুমন ঘোষ?
তিনি লিখেছেন, বছর চারেক আগে মায়ামির এক রেস্তোরাঁয় তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু টেবিল পেতে কিছুটা দেরি হচ্ছিল। তাঁরাও খুশি মনে বাইরের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
সুমন লিখেছেন, ‘এর পরেই দেখি, ওই বিখ্যাত মানুষটিকে (রজার ফেডেরার)। কয়েক জন সাংবাদিক তাঁর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। আমি ঠিক করি, সাক্ষাৎকার শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব। তার পরে আমার দুই মেয়ে মায়া আর লীলা (তখন তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৫ এবং ৩ বছর)-র সঙ্গে ওঁর ছবি তোলার অনুরোধ করব।’
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। এর পরে সুমন তাঁর দুই কন্যাকে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন, ফেডেরারের সাক্ষাৎকার শেষ হওয়ার। কী হয় এর পরে?
সুমনের কথায়, ‘সাক্ষাৎকার শেষ হল। আমি ওঁকে অনুরোধ করলাম। উনিও হাসিমুখে মেনে নিলেন। আমি দেখলাম, একটা বড়সড় ভিড় অপেক্ষা করে আছে ওঁর সঙ্গে ছবি তোলার জন্য। আমি ঝটপট মায়াকে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি কি এই ভদ্রলোকের সঙ্গে তোমার আর লীলার ছবি তুলব? মায়া উলটে প্রশ্ন করল, কেন? আমি বললাম, উনি খুব বিখ্যাত লোক।’
সুমন এর সঙ্গে লিখেছেন, এই ঘটনাটা যখন ঘটছে, তখন ফেডেরার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, অপেক্ষা করছেন এবং গোটাটা দেখছেন। কিন্তু সুমনের কথায় বিশেষ লাভ হয়নি। কারণ তাঁর কন্যা মায়া মোটেই বিষয়টিতে উৎসাহ দেখায়নি। এবং সে নিজের খেলাতেই মত্ত থাকে। অচেনা একজনের সঙ্গে যে সে ছবি তুলতে মোটেই আগ্রহী নয়, তা তার আচরণ থেকেই পরিষ্কার।
এর পরেই ঘটে অদ্ভুত ঘটনা। সকলের সামনে সুমনের অস্বস্তি দেখে এগিয়ে আসেন টেনিস তারকা নিজেই। সুমন লিখেছেন, ‘উনি নিজেই নিচু হয়ে বসে পড়েন। মায়াকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কি তোমার সঙ্গে ছবি তুলতে পারি, তুমি কি কিছু মনে করবে? তাতে মায়া মুখের উপর বলে, না! বলেই আবার খেলতে শুরু দেয়।’
বোঝাই যায়, অস্বস্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সুমনের অস্বস্তি কাটাতে ফেডেরার নাকি তখন বলেন, ‘আমার খুব মজা লাগল!’ সুমন লিখেছেন, ‘বোধহয় ওই প্রথম বার কেউ তাঁ সঙ্গে ছবি তুলতে চাইল না। আমি তখন ওঁকে বললাম, আমি কি আপনার সঙ্গে ছবি তুলতে পারি? মায়ার মতো মোটেই নয়, উনি সম্মতি দিলেন।’