সোমবার দুপুর থেকে হইচই, বৈঠক-পাল্টা বৈঠক, নাহ, তবু কাটল না টলিপাড়ার অচলাবস্থা। এদিনের পর ৩০জুলাই মঙ্গলবারও ফ্লোরে যাবেন না রাতের বৈঠকের পর জানিয়ে দিল ডিরেক্টরস গিল্ড। সোমবার রাত ৮টার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১২০ থেকে ১৩০জন পরিচালক। সকলেই একত্রে, একসুরে শ্যুটিংয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। একইসঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালকরা।
সোমবার রাত ৮টায় ডিরেক্টরস গিল্ডের বৈঠকে পরিচালকদের তরফ উপস্থিত ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অঞ্জন দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তী সহ অন্যন্য পরিচালকরা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা। সেখানে নিরপেক্ষভাবে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন পরিচালকরা। তাঁদের সাফ কথা, তাঁরা কাজ বন্ধের পক্ষে নন, তাঁরা কাজ বন্ধও করেননি। তবে চাপ দিয়ে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।
এদিনের বৈঠকে পরিচালক অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘আমরা তো সিনেমা করি, তাই যে সিনেমা বোঝে, নিরপেক্ষ আইন বোঝে, এমন কাউকে তৃতীয় পক্ষ করা উচিত।’ কিন্তু কে হবেন এই তৃতীয়পক্ষ? এই প্রসঙ্গ ধরে পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী বলেন, ‘সিনেমার সঙ্গে যুক্ত অথচ আইন বোঝেন, এমন কাউকেই আমরা চাইছি।’

এদিন অঞ্জন দত্ত আরও বলেন, ‘রাহুলকে কেন্দ্র করে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল। তবে সেটা এখন ৪০০ পরিচালকের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ পরিচালকদের অভিযোগ, ফেডারেশন একতরফা ভাবে আইন তৈরি করে, যাতে বাংলা সিনেমার শিল্পে বিনিয়োগ আসতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
এদিন অভিনেতা, পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, 'আমি অ্যালিগোরিকালি বলছি। এতেদিন জ্বর হলে দোকান থেকে টপ করে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলতাম। এবার আমার একটা ডাক্তার চাইছি। প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের একটা লম্বা কোর্স করতে রাজি।' পরিচালকদের সাফ কথা, বিষয়টা আর একজনের অপমানের উপর দাঁড়িয়ে নেই। এতদিনে চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টিও যুক্ত হয়ে গিয়েছে।
এদিন পরিচালকদের বৈঠকে ছিলেন রাজ চক্রবর্তী। ফেডারেশন কাজ বন্ধ প্রসঙ্গে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনেছে, সেবিষয়ে রাজের সাফ কথা, ‘আমরা কাজ বন্ধ রাখছি না। আমরা কাজ বন্ধ করিনি। এখন মুখ্যমন্ত্রীর কথা টেনে এনে আমরা কাজ বন্ধ রাখছি বোঝাতে চাইলে, তা সম্পূর্ণ ভুল হবে। আমাদের ফ্লোরে না ঢুকে কাজ বন্ধ করানো হয়েছে।'
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘আমরা আর টেকনিশিয়ানরা যে আলাদা, সেটা আজ প্রথম জানলাম। তবে এখানে আমরা-ওরা তত্ত্ব নিয়ে নয়, সমস্যার সমাধান খুঁজতে একজোট হয়েছি।’
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকের পর ফেডারেশনের কাছে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন পরিচালকরা। তবে বিকেল ৪টেয় ফেডারেশনের বৈঠকে কাজ বন্ধের দায় পরিচালকদের উপরই চাপিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। 'পুরো বিষয়টাই কিছু পরিচালকের ষড়যন্ত্র' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতেই এদিন রাত ৮টা নাগাদ ফের সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন পরিচালকরা।