রবিবার রাতে ইন্ডিয়ান আইডলের ট্রফি উঠেছে অযোধ্য়ার ঋষি সিং-এর হাতে। ঋষির সুরের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ দেশ। প্রত্যাশিতভাবেই ইন্ডিয়ান আইডলের ১৩তম সিজনের বিজয়ী ঋষি। যদিও গায়কের কথায়, তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি ট্রফি জয়ের কথা। বিজয়ী হিসাবে নিজের নাম শুনে কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিলেন ঋষি। তিনি বলেন, ‘আমি কোনওদিন ভাবি এই ট্রফিটা আমার হাতে উঠবে। এই জয়টা সেই সব মানুষের যাঁরা আমাকে সাপোর্ট করেছেন, সবার ভালোবাসাই আমার পাথেয়’।
ইন্ডিয়ান আইডলের বিজয়ীকে নিয়ে চারিদিকে উচ্ছ্বাস। এই শো তাঁকে সম্মান,স্বীকৃিতে ভরিয়ে দিয়েছে। কোনওরকম পেশাদার ট্রেনিং নেননি ঋষি, তবুও তাঁর সুরেলা কন্ঠে মন ভিজেছে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর। এতো ভালোবাসা আর স্বীকৃতির মাঝে ২১ বছরের ঋষির জীবনের সবচেয়ে কঠিন সত্যিটাও সামনে এসেছে এই শো-এর মঞ্চেই।
এই রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চেই ঋষি জানতে পারেন ২১ বছর ধরে যাঁদের নিজের বাবা-মা বলে জানতেন তিনি, তাঁরা তাঁর বায়োলজিক্যাল বাবা-মা নন। মা অঞ্জলি সিং তাঁকে নিজের গর্ভে ধারণ করেননি, রাজেন্দ্র সিং ও অঞ্জলি সিং-এর দত্তক পুত্র ঋষি। ট্রফি জয়ের পর এক সাক্ষাৎকারে ঋষি জানান, এটা তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন তবে ধ্রুব সত্যি, এবং কোনওভাবেই এই সত্যিটা তিনি অস্বীকার করতে পারবেন না। তবে নিজের পালক বাবা-মা'র কাছ থেকে যে পরিমাণ ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন, তাঁর জন্য নিজেকে ধন্য মনে করেন ঋষি।
ঋষি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমার কাছে এটা বিরাট বড় একটা ধাক্কা ছিল, আমি ভীষণরকমভাবে হতচকিত হয়ে পড়েছিলাম। তবে জরুরি হল আমি সত্যিটাকে গ্রহণ করে নিয়েছি। সেটা মেনে না নিলে আমার বাবা-মা’র সঙ্গে বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে কাটাতে পারব না। সকলেই দেখেছে আমাদের সম্পর্ক কতটা গভীর, সেটাই জরুরি।'
রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চে সমবেদনা জিততে অনেকেই মিথ্যা গল্প ফাঁদেন। তাই ঋষির ‘অ্যাডপশন’-এর কাহিনি সামনে আসবার পর অনেকেই এই ঘটনাকে সাজানো বলে অভিযোগ করেন, কেউ কেউ এমনটাও বলেন ঋষি সবটাই আগে থেকে জানতেন। এখানে এসে প্রথমবার জানবার নাটক করছেন। সেইসব নেতিবাচকরা নিয়ে ভাবতে রাজি নন ঋষি নন। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু নিজের পারফরম্যান্সের উপর নজর দিয়েছি, পরিশ্রম করেছি। এইসব নিয়ে কোনওদিন ভাবিনি, আর ভাবতে চাইও না’। এই কঠিন সত্যিটা তিনি ও তাঁর বাবা-মা স্বীকার করে নিয়েছে এটাই সবচেয়ে বড় কথা। আপতত নিজের প্লে-ব্যাক কেরিয়ারে ফোকাস করতে চান ঋষি, সঙ্গে নিজের অরিজিন্যাল মিউজিক তৈরিতে মন দিতে চান।