গত কয়েক দশক ধরেই বড়পর্দা এবং ছোটপর্দা জুড়ে 'তাঁকে' দেখছে দর্শক। তথাকথিত নায়িকা না হয়েও স্রেফ অভিনয়ের দক্ষতায় 'তিনি' জিতে নিয়েছেন দর্শকদের মন। কথা হচ্ছে টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সোমা দে-কে নিয়েই। যিনি এইমুহূর্তে কাজ করছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় ধারাবাহিক 'যমুনা ঢাকি'-তে। ওই ধারাবাহিকে তাঁর অভিনীত 'বিন্দুবাসিনী দেবী' চরিত্রটিতে আপাতত মজে রয়েছে দর্শক। 'বিন্দুবাসিনী দেবী'-র ভূমিকায় এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর শান্ত,আভিজাত্য সম্পন্ন অভিনয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ দর্শকরা। তবে জানেন কি পর্দার বাইরে সোমা দে-র ব্যক্তিগত জীবনের কথা?
ইচ্ছে ছিল গায়িকা হওয়ার। সেইমতো তালিমও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পাকেচক্রে হয়ে গেলেন অভিনেত্রী ১৯৭২ সালে অর্চন চক্রবর্তীর পরিচালনায় 'জীবনের জটিলতা' ছবিতে প্রথম অভিনয় করলেও 'হারায়ে খুঁজি' ছবির মাধ্যমে বাংলা ছবির জগতে পা রাখেন সোমা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ষাটটিরও বেশি ছবি ও প্রায় তিরিশটি ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য,তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় 'শহর থেকে দূরে' ছবিতে নিজের দক্ষ অভিনয়ের সুবাদে 'শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী'-র সম্মানও পেয়েছিলেন তিনি। তবে অভিনেত্রী হওয়ার যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না সোমা দেবীর কাছে। তাঁর অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছের কথা জানতে পেরে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন তাঁর বাড়ির লোক। কথা না বাড়িয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সোমা দেবী। থাকা শুরু করেন ‘ওয়াইডব্লুসিএ’-এর বোর্ডিংয়ে। ততদিন ছিলেন যতদিন না তাঁর প্রথম সুপারহিট ফিল্ম মুক্তি পেয়েছিল। পাশাপাশি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর হয়েছিলেন পলিটিক্যাল সায়েন্সে। সাহিত্য,অঙ্ক ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি রয়েছে তাঁর প্রবল অনুরাগ। তবে এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর বিষয়ে বেশ একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে দর্শকদের একাংশের মধ্যে। অনেকেরই ধারণা অভিনেতা দীপংকর দে-র প্রথম স্ত্রী বুঝি সোমা। এ ধারণার উদ্ভব সোমাদেবীর পদবি যেহেতু দে। তবে আসল কথা বর্ষীয়ান অভিনেতা দীপংকর দে আদতে সোমাদেবীর সহকর্মী বৈ আর কিছু নন। সোমা দে-র স্বামীর নাম বিবেক চট্টোপাধ্যায়। তবে অনস্ক্রিন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী তাঁর স্বামীর পদবি ব্যবহার করেন না। আর তাতেই বেড়েছিল ওই জল্পনা।