রিয়া চক্রবর্তী সম্প্রতি তাঁর সাক্ষাত্কারে দাবি করেন সুশান্ত সিং রাজপুত নাকি ২০১৩ সাল থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন। এবং ২০১৪ সালে এক মনোচিকিত্সকের পরামর্শও নিয়েছিলেন সুশান্ত। তবে সেই চিকিত্সক জানিয়েছেন মানসিক অবসাদ নয় ইনসোমনিয়ার কারণে সুশান্ত তাঁর কাছে পরামর্শ নিতে এসেছিলেন এবং অভিনেতার মধ্যে অন্য কোনওরকম অস্বাভাবিকতা নজরে আসেনি তাঁর।
ইন্ডিয়া টুডের তরফে দাবি করা হয়েছে মুম্বই পুলিশকে দেওয়া বয়ানে এমনটাই জানিয়েছেন সেই চিকিত্সক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পুলিশকে ওই মনোবিদ জানান, ‘আমার অন্ধেরির ক্লিনিকে সুশান্তে একবার এসেছিলেন ২০১৪ সালে। কোনওরকম অ্যাপয়েনমেন্ট না নিয়েই হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা। সেইসময়ও ওখানে অনেক মানুষের ভিড় ছিল। সুশান্ত আমাকে বলেছিল আমাকে এই মুহূর্তে ওর সমস্যার সব তথ্য ও বিস্তারিতভাবে দিতে পারবে না। তবে বলে ওর রাতে ঘুম হচ্ছে না এবং ইনসোমনিয়ার শিকার সে। আমি ওকে বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করে কোনওরকম মারাত্মক কোনও সমস্যা খুঁজে পাইনি। আমি ওকে কিছু ওষুধ দিয়েছিলাম এবং ভবিষ্যতে আসার জন্য একটা তারিখও বলেছিলাম’।
চিকিত্সক জানান, সুশান্ত এরপরে আর কোনওদিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।তিনি ঠিক কেমনভাবে সুশান্তের চিকিত্সা করেছিলেন সেই নিয়েও বিস্তারিত জানান ওই চিকিত্সক। নিয়ম মেনেই তিনি প্রশ্ন করেন, আত্মহত্যার কোনওরকম প্রবণতা তাঁর মধ্যে রয়েছে কিনা। আমি কোনও কিছু থেকে ভয় বা কোনও ধরণে ফোবিয়া রয়েছে কিনা। ঠিকভাবে সময়মতো খাওয়া দাওয়া করা হয় কিনা। যা যা প্রশ্ন জানবার দরকার হয় ওষুধ প্রেসক্রাইব করবার আগে সবই তিনি করেছিলেন।
ইনসোমনিয়া, অর্থাত্ ঘুমের সমস্যার শিকার ছিলেন সুশান্ত, এ কথা অজানা নয় তাঁর অনুরাগীদের। নিজের প্রায় সমস্ত সাক্ষাত্কারেই নিজের মুখে সুশান্ত জানাতেন রাতে দু-ঘন্টার বেশি ঘুম হয় না তাঁর।
ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে রিয়া চক্রবর্তী দাবি করেছিলেন হরিশ শেট্টি নামের এই চিকিত্সকের কথা। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হওয়ার কারণে নাকি এই চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়েছিলেন সুশান্ত, তাও ২০১৩ সালে। সুশান্ত মামলার মূল অভিযুক্ত যোগ করেন ২০১৯ সালে ইউরোপ ট্রিপের সময় নাকি সুশান্ত রিয়াকে বলেছিল ২০১৩ সালে নিজের অবসাদগ্রস্ত হওয়ার কথা। আমি প্রশ্ন করায় জানিয়েছিল হরিশ শেট্টি নামের এক চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়েছিল ও। সেই চিকিত্সকই নাকি মোডাফিনিল নামের মেডিসিন প্রেসক্রাইব করেছিল সুশান্তকে। যেটা ও ফ্লাইটে ওঠবার সময় খেত কারণ ওর ক্লস্টোফোবিয়া রয়েছে, দাবি করেন রিয়া। সেই সময়ের চেয়ে নাকি আরও খারাপ অনুভূতি হচ্ছিল সুশান্তের সেই কারণেই ট্রিপ ছোট করে দেশে ফিরে আসেন সুশান্ত-রিয়া।
এর আগে বরখা দত্তকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে সুশান্ত এবং রিয়ার সাইকো-থেরাপিস্ট সুজন ওয়াকার জানান ‘সুশান্ত মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন এবং বাইপোলার ডিসওর্ডারের শিকার ছিলেন’।
১৪ জুন সুশান্তের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। আপতত নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো, সিবিআই এবং ইডি-তিন কেন্দ্রীয় সংস্থা এই মামলার তদন্ত করছে।