সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় দু-দফায় রিয়া চক্রবর্তীকে প্রায় ১৮ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তবুও সুশান্তের অ্যাকাউন্টে সরাসরি কোনও বিশাল অঙ্কের টাকা রিয়া কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারের প্রমাণ এখনও অধরা ইডির হাতে। আপতত সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গত এক বছরে কত টাকা নগদ হিসাবে তোলা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট,খবর ইডি সূত্রে-জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন।
বান্দ্রার কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কে সুশান্তের যে অ্যাকাউন্টি রয়েছে সেখান থেকে ৫৫ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছিল। সূত্রের খবর সেই টাকা কোথায়,কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত আর্থিক বছরের শুরুতে ওই অ্যাকাউন্টে ১৫ কোটি টাকা ছিল এবং সেটি আয়কর এবং যাতায়াত সংক্রান্ত টাকা মেটানোর জন্য ও অনান্য কাজে ব্যবহার করা হত। ইডি তদন্ত করে দেখেছে রিয়া সুশান্তের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরই জয়েন্ট হোল্ডার নন। কোটাক মহিন্দ্রার ওই অ্যাকাউন্টিতে সুশান্তের পাশাপাশি জয়েন্ট হোল্ডার হলেন অভিনেতার দিদি প্রিয়াঙ্কা সিং।
য়দিও রিয়ার আয় এবং ব্যায়ে বিস্তর গোলমাল ধরা পড়েছে ইডির নজরে। অভিনেত্রীকে তাঁর আয় এবং বিনিয়োগের বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সুশান্ত সিং রাজপুত প্রতিষ্ঠিত দুটি সংস্থার (ফ্রন্ট ইন্ডিয়া ফর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন এবং ভিডিডরেজ রিয়ালিটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড) ডিরেক্টারের পদেও রয়েছেন রিয়া ও তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, এবং বাবা ইন্দ্রজিত্ চক্রবর্তী। সুশান্তের আরও দুটি কোম্পানিও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সেই চারটি কোম্পানি সম্পর্কেও তথ্য জানতে চায় ইডি।সুশান্তের সঙ্গে পরিচয়ের পর কীভাবে গোটা চক্রবর্তী পরিবারের আয় এবং ব্যায় একলাফে বেড়ে গিয়েছিল, সেটাও রয়েছে ইডির নজরে।
২০১৯-এর সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ভিডিডরেজ রিয়ালিটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, অন্যদিকে ফ্রন্ট ইন্ডিয়া ফর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন সংস্থা গঠিত হয় ২০২০-র জানুয়ারি মাসে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মাত্র ছয় মাস আগে।
গত ৩১ জুলাই সুশান্তের পরিবারের তরফে দায়ের এফআইআরের ভিত্তিতে রিয়া ও তাঁর পরিবার সহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করে ইডি। এফআইআরে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা ‘গায়েব’ হওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন কেকে সিং।
এই মামলায় এখনও পর্যন্ত দু-দফায় গত শুক্রবার এবং সোমবার রিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডির আধিকারিকরা। জেরার মুখে পড়তে হয়েছে রিয়ার ভাই শৌভিক, বাবা ইন্দ্রজিত চক্রবর্তী, ম্যানেজার শ্রুতি মোদি, সুশান্তের ফ্ল্যাট মেইট সিদ্ধার্থ পিঠানি, হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা, সুশান্ত ও রিয়ার চাটার্ড অ্যাকাউন্টাট এবং প্রয়াত অভিনেতার দিদি মিতু সিংকে।