বছরের গোড়ার দিকেই বাংলা সাহিত্য জগতের অন্যতম প্রখ্যাত সাহিত্যিক চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বইমেলার মাত্র কদিন আগেই চলে গেলেন একেন বাবুর স্রষ্টা সুজন দাশগুপ্ত। এই বইমেলায় তাঁর একটি বই প্রকাশ হওয়ার কথা। তার আগেই ১৮ জানুয়ারি সকালবেলায় জানা যায় যে তিনি না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন। বাংলার পাঠক সমাজ তো বটেই, সিনেমাপ্রেমীদের কাছেও এই খবর অত্যন্ত দুঃখজনক। শত হলেও তাঁর হাত ধরেই বাঙালি একজন খাদ্যরসিক গোয়েন্দা পেয়েছে!
সুজন দাশগুপ্ত মূলত আমেরিকাতে থাকতেন। কিন্তু বইমেলায় যেহেতু তাঁর নতুন বই প্রকাশ হওয়ার কথা আছে সেহেতু তিনি কিছুদিন আগে দেশে ফিরে ছিলেন। বইমেলার পর মার্কিন মুলুকে ফিরে যেতেন তিনি। তার আগেই সব কিছুকে অকস্মাৎ থামিয়ে দিয়ে বুধবার চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এদিন তাঁর নিথর দেহ পাওয়া যায় তাঁর ফ্ল্যাটে। আর এই এত বড় শোক নিতে পারেননি একেন বাবু, ওরফে অনির্বাণ চক্রবর্তী।
অনির্বাণ চক্রবর্তীর অভিনয়ের কেরিয়ার যাঁর তৈরি চরিত্রের হাত ধরে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেল তাঁর চলে যাওয়াটা কিছুতেই তিনি মেনে নিতে পারছেন না। অনির্বাণকে ছাড়া আজ আর কেউ একেন বাবু ভাবতে পারেন না। বড়পর্দা হোক বা ওয়েব সিরিজ সর্বত্রই একেন বাবু বলতে একজনকেই বোঝে এখন বাঙালি। আর তিনি হলেন অনির্বাণ চক্রবর্তী।
টিভি ৯ বাংলার থেকে সুজন দাশগুপ্তর চলে যাওয়ার খবর পান অভিনেতা। প্রথমটায় তিনি কিছুতেই সেটা বিশ্বাস করতে পারেননি। কিছুদিন আগেই যে তাঁর লেখকের সঙ্গে কথা হয়েছে। খবরটা পেয়ে অভিনেতা বলেন, 'সে কী! কী খবর শোনালেন এটা। কখন ঘটল? উনি তো এখন কলকাতায়। মাঝে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আমার সঙ্গে দুই তিনদিন আগেই কথা হল। ২৪ তারিখ ওঁর বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল আমার।'
সুজন দাশগুপ্ত কেন কলকাতা এসেছিলেন সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিনেতা বলেন, 'আমি জানি উনি বইমেলার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। এই বইমেলায় একেন বাবুর আরেকটি খণ্ড প্রকাশ পাওয়ার কথা ছিল। সেটা করেই তিনি ফিরে যেতেন।'
অভিনেতা আরও বলেন, 'উনি হাসপাতাল থেকে ফেরার পরও ওঁর সঙ্গে কথা হয়। ওঁরা তো এখানে কেউ থাকেন না। আমেরিকা থেকে উনি আর ওঁর স্ত্রী এসেছিলেন। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কী যে হয়ে গেল... আমি খুব অসহায় হয়ে পড়ছি। উনি আমার সঙ্গে আমেরিকার নম্বর দিয়েই যোগাযোগ করতেন।'
সুজন দাশগুপ্তর চলে যাওয়া যেন তাঁর পিতৃবিয়োগের মতোই কষ্টের। যাঁর কারণে তিনি লাইম লাইটে এসেছিলেন তাঁর চলে যাওয়া এখনও মেনে নিতে পারছেন না অনির্বাণ।