ছোটবেলা থেকেই রং খেলতে দারুণ ভালবাসেন অহনা দত্ত। তবে এবছর অনেক কাছের মানুষকে হারিয়েছেন তিনি, তাই এবার আর রঙ খেলা হবে না। তাছাড়াও বর্তমানে অভিনেত্রী চার মাসের অন্তঃসন্ত্বা। সবটা নিয়ে এই দোলটা কীভাবে পালন করবেন অভিনেত্রী? হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার সঙ্গে দোল নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন নায়িকা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে শাশুড়িকে হারিয়েছেন অহনা। তাই নিয়ম অনুসারে একটা বছর কোনও উৎসবে সামিল হতে পারবেন না বলে জানান অভিনেত্রী। তাছাড়াও এ বছরের শুরুতে দিদাকেও হারিয়েছেন তিনি। তাই বছরটা রঙ ছাড়াই কাটবে তাঁর। অভিনেত্রীর কথায়, ‘এই বছর দোলের সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। এ বছরের দোলটা খুব শান্ত ভাবে কাটতে চলেছে। এই দিন আমি পুজো দেব। আমার পোষ্যদের সঙ্গে থাকব। তাছাড়া দিদির (অহনার স্বামী দীপঙ্করের দিদি) বাড়িতে যাব। এছাড়া আর আলাদা করে এই বছরের দোলটা নিয়ে ভাবিনি।’
আরও পড়ুন: মাত্র ৬ বছর বয়সে শুরু করেছেন কেরিয়ার, দেখুন তো ছবির ছোট্ট মেয়েটিকে চিনতে পারছেন?
তবে এই বছর দোলের রঙ ফিকে হলেও অন্যান্য বছরগুলো তাঁর ভীষণ রঙিন উদযাপনের মধ্যে দিয়ে কাটে। নায়িকার কথায়, 'ছোট থেকেই রঙ খেলতে ভীষণ ভালোবাসি। তবে গত বছরের দোলটা আমার জন্য খুব স্পেশাল ছিল। কারণ সেটাই ছিল বিয়ের পর আমার প্রথম দোল। আগের বছরও দিদির বাড়িতেই দোলের দিনটা কেটেছিল। ভীষণ মজা করেছিলাম।'
ঠিক কী ভাবে হয়েছিল সেই উদযাপন? প্রশ্নে নায়িকা বলেন, 'দিদির বাড়ির সামনে একটা বড় মাঠ রয়েছে। সেই মাঠে বক্সে গান চালিয়ে আমরা খুব নাচ করেছিলাম। আমার শাশুড়ি মা তখন অসুস্থ, ওঁর যে ক্যানসার সে কথাও তিনি জানতেন। কিন্তু সেই দিনটা সব ভুলে তিনি আমাদের সঙ্গে পা মিলিয়ে ছিলেন। সেদিন আমার বর প্রথমবারের জন্য নিজের মাকে নাচতে দেখেছিল। আমরা প্রচন্ড আনন্দ করেছিলাম। জীবনে এতটা আনন্দ করে আমার কোনও দোল কাটেনি। তাছাড়াও বাড়তি পাওনা ছিল আমার পোষ্যর আমাদের সঙ্গে যাওয়া। ওকে নিয়েও অনেক ছবি তুলেছিলাম। আগের বছরের দোলটাকে খুব খুব মিস করছি। সেদিন মাটন রান্না হয়েছিল, আমরা কব্জি ডুবিয়ে খেয়েছিলাম।'
আরও পড়ুন: ১০ বছর প্রেম, কীভাবে আদিত্য প্রপোজ করে ‘চাইল্ডহুড সুইটহার্ট’ শ্রেয়াকে? মিষ্টি গল্প গায়িকার জন্মদিনে
কিন্তু এবার আর দোলের দিনের খাবার নিয়ে বিশেষ কোনও আয়োজন নেই। তাঁর মতে, এখন খাবারের পুরো বিষয়টাই নির্ভর করে ইচ্ছে আর শরীরের উপর। আর তা হওয়ায় স্বাভাবিক। গর্ভাবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে হবু মা-র শরীর ও মনে পরিবর্তনের ঝড় বয়ে যায়। যার অন্য়তম হল প্রেগন্যান্সি ক্রেভিং। এই সময় কখনও কখনও বিশেষ কিছু খেতে ইচ্ছে করে, আবার কখনও কখনও খেতেও ইচ্ছে করে না। তাই দোলের মেনু নিয়ে এখন থেকেই কিছু স্থির করেননি অভিনেত্রী।
তবে সম্প্রতি অহনা তাঁর পোষ্যদের নিয়ে জিলিপি খাওয়ার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। কিন্তু এই ভিডিয়ো দেখে বেশ কিছু নেটিজেন বিরূপ মন্তব্য করেছেন। সেই প্রসঙ্গে নায়িকা বলেন, ‘সকলে আমাকে এত কথা শোনাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন ‘তুমি কী নিষ্ঠুর’। এখন কীভাবে ওঁদের বোঝাই যে পোষ্যদের মিষ্টি ও তেলে ভাজা জাতীয় খাবার দেওয়া উচিত নয়। ওদের স্বাস্থ্যের জন্য যেটা ভালো, সেটা সব সময়ই ওদের দেওয়া হয়। ওই ভিডিয়োটা নিছক মজার ছলেই বানানো।’
অভিনেত্রী জানান, ছোটবেলাতেও দারুণ মজা করে দোল উদযাপন করতেন তিনি। মামার পাড়াতে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেই দোলের আনন্দে মেতে উঠতেন তিনি। নায়িকা বলেন, ‘বালতিতে রঙ গুলে সকাল সকাল ভ্যানে চেপে বেরিয়ে পড়তাম। ভ্যানে করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বালতি থেকে পিচকারিতে রঙ নিয়ে সবার গায়ে দিতাম। তাছাড়া অনেকের মাথায় ডিমও ফাটিয়েছি। তাছাড়া নিজেরাও খুব রঙ মাখতাম। সেই রঙ অনেক সময় মুখের মধ্যে চলে যেত। বলা যায় রঙ খেয়েও ফেলতাম। আমি কখনও বলি না যে, আমাকে রঙ দেবে না বা এই সব। কারণ আমি রঙ মাখতে খুব পছন্দ করি। এই ভাবে অনেক বড় বয়স পর্যন্ত রঙ খেলেছি।’ শুধু তাই নয় মেগার সেটে দোলের আগের দিন প্যাকআপের পর দোল খেলা হয়। সেটাও যথেষ্ট মিস করবেন বলে অভিনেত্রী জানিয়েছেন।